ইউনএনও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের

বিশেষ প্রতিনিধি
জগন্নাথপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের মেইলে তিনি এই অভিযোগ পাঠান।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খানম সাথী জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দুর্ব্যবহারের কারণে বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সভাও বয়কট করেছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবশ্য বলেছেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে তেমন কিছুই হয় নি। কেন যে তিনি এমন অভিযোগ করলেন, বুঝে ওঠতে পারি নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে মাসিক সাধারণ সভা শুরু হয়। সভায় উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালনসহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিপি’র)’র প্রকল্প অনুমোদনের কথা ওঠলে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খানম সাথী প্রকল্প নিয়ে তার সঙ্গে কোন কথাই হয় নি জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসময় ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটি হয়।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খানম সাথী বললেন, চার মাস হয় নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তিনি। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি কেবল অবজ্ঞাই পেয়েছেন। কোন সহযোগিতা বা সম্মান পান নি। বৃহস্পতিবার মাসিক উন্নয়ন সভায় ২০২২ অর্থবছরের এডিপি প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা তার মাইক বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে তিনি তাকে বলেন, ‘আগে আমার কাছে এসে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার শিখুন’। এছাড়াও সবসময়ই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাগান্নিত হয়ে কথা বলেন। তিনি নিজেকে ‘মন্ত্রী’র চেয়েও বড় ভাবেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় বা উর্ধ্বতন কেউ আসলে আমাকে মুখের কথাও জানান না। এই অবস্থায় আমি জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত আবেদন করেছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন বললেন, পরিষদের মাসিক সভার শেষ দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কথা কাটাকাটি হয়। আমরা বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান চলে যাওয়ায় মিমাংসা করা যায় নি। আমরা চেষ্টা করবো মিমাংসা করার।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুল ইসলাম বললেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সভায় এডিপির প্রকল্পের বিষয়ে আমার কাছে জানতে চাইলে, আমি তাকে বললাম, সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদস্য সচিব উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী, আমি কেবল সদস্য। জবাব চাইলে আমার কাছে কেবল নয়, উনাদের কাছে চাইতে পারেন। সভায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তার অফিসের টেবিলের ড্রয়ার ভাঙার কথাও ওঠান। পরে আমি বলেছি, এগুলো ব্যক্তিগত বিষয় পরে ওঠানোর জন্য। তিনি একদিন বলেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক কম বুঝেন। এজন্য আমি বলেছি, এগুলো জানা থাকলে তার সঙ্গে করসপন্ডেট সুবিধা হবে। এর বেশি কিছু হয় নি।’
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বললেন, আমি জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিখিত অভিযোগ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেইলে পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো কি হয়েছে ওখানে।