বিশেষ প্রতিনিধি
চার দফায় তারিখ করে ঢাকঢোল পিঠিয়ে প্রচার করলেও শেষ পর্যন্ত হয় নি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এবার পঞ্চম দফায় ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। এই তারিখেও হবে কী না, এ নিয়ে শঙ্কা আছে কর্মীদের মধ্যে। এজন্য সম্মেলন কেন্দ্রীক উত্তাপ কমেগেছে এই জেলার সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে।
দুই মাসে চার দফায় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ পেছানো হয়েছে। গেল ৩০ নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা শুরু হয়। সম্মেলনের কয়েক দিন আগে তারিখ পরিবর্তনের কথা জানিয়ে বলা হয় সম্মেলন হবে ছয় ডিসেম্বর। ২৬ নভেম্বর আবার তারিখ পরিবর্তনের ঘোষণা আসে, কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা ওই সময় বললেন, সম্মেলন হবে ১১ ডিসেম্বর। এরপর আবার কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের উধৃতি দিয়ে আবার জানানো হয়, সম্মেলন ১১ ডিসেম্বর নয়, হবে ২০ ডিসেম্বর। শুক্রবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান জানান, আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলন হচ্ছে ১১ ফেব্রুয়ারি। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তারিখ করা হয়েছে।
এদিকে, বার বার সম্মেলনের তারিখ পেছানো এবং নতুন তারিখ ঘোষণায় জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সম্মেলন কেন্দ্রীক উত্তাপ কমে গেছে।
উপজেলাগুলোর ক্ষেত্রেও এমন অবস্থা হয়েছে। কয়েক দফায় তারিখ পিছিয়ে জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে সাতটি উপজেলার সম্মেলনও করতে পারেন নি দায়িত্বশীলরা। ২০ ডিসেম্বরের আগে জেলা নেতাদের পক্ষ থেকে কয়েক উপজেলায় সম্মেলন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত (২১ জানুয়ারি পর্যন্ত) বাকী সাত উপজেলা সম্মেলনের তারিখ হয় নি।
২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি মতিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন। পরে ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ছয় বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন চার দফায় তারিখ পেছানোয় হতাশা আছে নেতা কর্মীদের মধ্যে। একইভাবে উপজেলা সম্মেলন না হওয়ায়ও ক্ষুব্ধ অনেকে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক এমপি বললেন, ৩২ বছর পর ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০ ও ২১ নভেম্বর। এই দুই উপজেলায় ব্যাপক আয়োজন করেছিলেন নেতাকর্মীরা। একদিন আগে সম্মেলন পেছানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছেন নেতাকর্মীরা। তিন উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে, কমিটি করা যায় নি। জেলা সম্মেলনের তারিখও বার বার পেছানো হয়। এখন ১১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের তারিখের কথা বলা হচ্ছে, জাতীয় সম্মেলনের আগে সম্মেলন করা গেল না। এখন কম সময়ের মধ্যে সম্মেলন করার বিষয়টি পরিস্কার নয় আমার কাছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বললেন, সম্মেলনের একটি তারিখ হয়েছে। ২৯ তারিখের পর এটি চূড়ান্ত হবে। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, জেলার মন্ত্রী, সংসদ সদস্যগণ এবং জেলা কমিটির দায়িত্বশীল সকলে মিলে কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বললেন, কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেই ১১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের তারিখ হয়েছে। ওইদিন সম্মেলন হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) বললেন, আমরা কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরাই ১১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের তারিখ দিয়েছি। বার বার তারিখ পেছানো হয়। এবার আশাকরছি হবে। তিনি এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
- দিনভর ধামাইল উৎসবে মেতেছিলেন হাজারো মানুষ
- জামালগঞ্জে শীতবস্ত্র বিতরণ