জামালগঞ্জে পিঠা উৎসব

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
পিঠাপুলির দেশ বাংলাদেশ। পিঠা এদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। পৌষের হিমেল হাওয়া ছাড়া যেমন শীতকে কল্পনা করা যায় না, ঠিক তেমনী পিঠা ছাড়া বাঙালির ঐতিহ্য ভাবা যায় না। বাঙালির ঐতিহ্য পিঠা পার্বণের আনন্দ ধারা ধরে রাখতে জামালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব।
বুধবার সকাল থেকে দিনব্যাপী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উপজেলা লেডিস ক্লাবের তত্বাবধানে জামালগঞ্জ কিন্ডার গার্টেন এন্ড জুনিয়র হাইস্কুলের মাঠে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ^জিত দেব’র সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল-আজাদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তনুকা ভৌমিক, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বীনা রাণী তালুকদার, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনন্দা রাণী মোদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মাদ আলী জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান ভুষন চক্রবর্তী, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. ওয়ালী উল্লাহ সরকার সহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ।
উৎসবের আয়োজকরা বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও আগামী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানাতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
পিঠা উৎসবের উদ্যোক্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও জামালগঞ্জ লেডিস ক্লাবের সভাপতি সুনন্দা রাণী মোদক বলেন, আমরা আর আগের মতো বাহারি রকমের পিঠা দেখতে পাই না। উপজেলাবাসীকে শীতের আমেজে একদিনের জন্য হলেও আনন্দ দিতে এই পিঠা উৎসবের আয়োজন। সবার সহযোগিতা পেলে প্রতি বছরই পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে।
পিঠা উৎসবে জামালগঞ্জ লেডিস ক্লাব, জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জামালগঞ্জ পোষাক বাড়ী, জামালগঞ্জ সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর সহ ৯টি স্টল বসে। স্টলগুলোতে ছিল নকসী পিঠা, দুধ পিঠা, সবুজ পিঠা, গোলাপ পিঠা, মিষ্টি ও নানান বাহারী নামের পিঠা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ^জিত দেব বলেন, পিঠা উৎসব আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধারন ও সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট রাখতে এই আয়োজন। এ ধরনের আয়োজন পারস্পরিক সৌহার্দ, সম্প্রতি, ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে।
উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল-আজাদ বলেন, আমাদের গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য ও বাংলার সংস্কৃতির ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ পিঠা। শীত এলেই ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা উৎসব। তবে আধুনিক নগর সংস্কৃতির প্রভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী রকমারী পিঠা। তাই বাংলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে প্রথমবারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও দিনব্যাপি জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে উৎসব মাতিয়ে রাখেন।
পিঠা উৎসবে পোষাকবাড়ী প্রথম ও জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দ্বিতীয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের স্টল তৃতীয় হয়েছে।