স্টাফ রিপোর্টার
গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মকে ঘোড় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় পরিচিত করা এবং বোরো চাষাবাদ মৌসুমে কৃষকদের উৎসাহিত করতে সুনামগঞ্জে তিন দিনব্যাপি ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শহরতলির মোল্লপাড়া ইউনিয়নের বেতগঞ্জ বাজারের পাশের জালালপুর ও লালপুরের মধ্যবর্তী মাঠে দুই গ্রামবাসীর আয়োজনে এই উৎসব হচ্ছে।
রবিবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। শুরুর দিন বিকাল চারটায় অতিথি ঘোড়া সমীর বাংলা, অচিনপাখি, পাগলা মিজান, সোনার হরিণ, পাখির বাচ্চা, আলিম বাদশা ও আমিন রাজাকে নিয়ে মাঠে নামেন সওয়ারগণ। মাঠ ঘুরে দেখানোর (ফেরী করানোর) কাজ করেন তারা। কাল থেকে এই মাঠেই চলবে প্রতিযোগিতা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবার শতাধিক ঘোড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ, বাহুবল, বানিয়াচঙ, সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের সকল উপজেলা থেকেই সওয়ারসহ ঘোড়া নিয়ে এসেছেন সৌখিনরা।
জামালগঞ্জের ভীমখালি থেকে দৌঁড়ের ঘোড়া ‘সোনার বাংলা’ নিয়ে প্রতিযোগিতায় এসেছেন সাব্বির আহমদ। বললেন, যেখানেই ঘোড় দৌঁড় হয়, আমন্ত্রণ পেলেই যাই। এখানে এসেছি। তিনদিনের এই উৎসবে যারা আসবেন আনন্দ করেই কাটাবেন।
শান্তিগঞ্জের জীবধারা থেকে এসেছেন আলা উদ্দিন আহমদ। বললেন, মাঘ মাসের মাঝামাঝি থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত ঘোড়া নিয়ে মেলায় মেলায় যাই। বৈশাখে ফসল ভালো হলে জৈষ্ঠ্য মাসেও হয় ঘোড় দৌঁড় উৎসব।
সুনামগঞ্জ শহরে কর্মরত সরকারি চাকুরিজীবী শফিকুল ইসলাম রবিবার দুপুর থেকে ঘোড় দৌড় দেখার জন্য বেতগঞ্জ বাজারের পাশের মাঠে গেছেন। বললেন, বহুদিন ধরেই ঘোড় দৌঁড় দেখার ইচ্ছা ছিল আমার। সুযোগ পেয়েছি, শহরের পাশের এই উৎসবে চলে এসেছি।
ঘোড় দৌঁড় আয়োজক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বললেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা, সকলকে বিনোদন দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন। আশাকরি সকলে এতে সহযোগিতা করবেন। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শতাধিক ঘোড়া এসে আশপাশের গ্রামে ও মাঠে অবস্থান নিয়েছে।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বললেন, একসময় বাহন হিসেবেই ব্যবহার হতো ঘোড়া। এখন আর তা খুবই কমই হয়। ঘোড়াও হারিয়ে যাচ্ছে। সৌখিন ঘোড়া মালিকরা এখন ঘোড় দৌঁড়ে ঘোড়া নিয়ে আসেন। গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরা এবং সকলকে বিনোদন দেবার জন্যই ঘোড় দৌঁড়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
- প্রকাশ্যে জুয়ার মেলা প্রশ্নবিদ্ধ করছে গ্রামীণ ঐতিহ্যকে
- গুইরা খাল শুকিয়ে মৎস্য নিধন হুমকির মুখে সেতু