স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জে পৃথক পৃথক ৬টি ধর্ষণ ও অপহরণের মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সোমবার সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
জানা যায়, ভিকটিম লাকী বেগমকে জোরপূর্বক অপহরণ করিয়া ঢাকায় নিয়ে যায় আসামী হারুণ মিয়া। ঢাকায় ৮/৯ দিন অবস্থান করার পর ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল আসামী হারুন মিয়া ভিকটিমকে নিয়ে সুনামগঞ্জে এলে পুলিশ তাকে আটক করে এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে। হারুন মিয়া (৪২) সদর উপজেলার মঈনপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে।
আদালত আসামী হারুণ মিয়া কে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়াও অনাদায়ে অতিরিক্ত ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবুল বাশার।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট ছাতক থানাধীন পাইগাঁও গ্রামের ৩য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী মক্তবে যাওয়ার জন্য বের হয়। গ্রামের মসজিদের সামনে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামী আক্তার হোসেন তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। আসামী আক্তার হোসেন ছাতক উপজেলার গড়গাঁও দড়ারপাড়া গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে।
আদালত আসামী আক্তার হোসেনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত ৪ মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন।
অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় সফর আলী এবং মনোয়ার হোসেন কে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন জয়শ্রী দেব।
২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর ছাতক থানার কেশবপুর গ্রামের এজাহারকারীকে আসামী লায়েক মিয়া ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এসময় এজাহারকারীর চিৎকারে অন্যরা এসে আসামীকে আটক করে। পরে থানায় মামলা দায়ের হয়। আসামী লায়েক মিয়া ছাতক উপজেলার বাউসা গ্রামের আবাব মিয়ার ছেলে।
আদালত ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে আসামী লায়েক মিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়াও অনাদায়ে অতিরিক্ত ৩ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. কামাল হোসেন (৩)।
২০১৩ সালের ২০ জুলাই রাতে সুহিতপুর গ্রামের এজাহারকারীকে ধর্ষণ করে গ্রামের মোশারফ আলীর ছেলে শামসুন নূর অরফে শামসু মিয়া (৫২)। মামলা আসামীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে সক্ষম না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট সালেহ আহমদ।
২০১২ সালের ১০ আগস্ট সকালে যৌতুকের দাবিতে ভিকটিম মোছা. সেলিনা বেগম কে মেরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে মো. আমির উদ্দিন (৩৫)। সে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নৈনগাঁও গ্রামের মো. ছায়েদ আলী ছেলে। তবে আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. শাহ আলম।
মোছা. আছিয়া বেগমকে যৌতুকের দাবিতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করত মোক্তার হোসেন (২২)। সে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণাপাটি গ্রামের মোঃ আব্দুল হামিদের ছেলে। ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল সকালে বিদেশ যাওয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে কাঠের রুল দিয়ে মোছা. আছিয়া বেগমকে রক্তাক্ত জখম করে মোক্তার হোসেন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কোর্টে এসে মোছা. আছিয়া বেগম মামলা দায়ের করেন। আদালত আসামী মোক্তার হোসেন কে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়াও অনাদায়ে অতিরিক্ত ২ (দুই) মাসের অতিরিক্ত কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী পলাতক ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পি.পি নান্টু রায়।
- শামীমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শাল্লায় মানববন্ধন
- ৮৮ ইউনিয়নে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে তথ্যচিত্র