নদীতে চাঁদাবাজি বন্ধে জামালগঞ্জে মানববন্ধন

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
রক্তি ও সুরমা নদীতে চলাচলরত বালু—পাথর বোঝাইকৃত বাল্কহেড থেকে বিআইডব্লিউটি এর ইজারাকৃত চাঁদা আদায়ের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ গেট সংলগ্ন নদীর পাড়ে দুর্লভপুর বালু—পাথর ব্যবসায়ী সংস্থা, নৌকা মালিক সমিতি ও একাধিক নৌযান শ্রমিক সংগঠনের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা পরিষদের সামনে সুরমা নদীর ঘাটে প্রায় শতাধিক বোঝাইকৃত নৌকা নোঙর করে রাখে শ্রমিকরা। মনজুরুল হক আফিন্দির সঞ্চালনায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দুর্লভপুর বালু—পাথর ব্যবসায়ী সংস্থার সভাপতি ও সাচনাবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক আফিন্দী, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু, দুর্লভপুর বালু—পাথর ব্যবসায়ী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নবী হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সুনামগঞ্জ মালবাহী নৌযান শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জামালগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী তালুকদার, কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা হাবিবুর রহমান, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ বছর যাবত আমরা উপজেলার দুর্লভপুর পয়েন্টে বালু, পাথর ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। জেলার ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুরসহ সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বালু, পাথর সংগ্রহ করে নৌপরিবহনে ঢাকাসহ সারা দেশে নেয়া হয়। সংগ্রহকৃত এই বালু, পাথর বাল্কহেড দিয়ে জামালগঞ্জের সুরমা ও রক্তি নদী দিয়ে যাওয়ার সময় বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদা আদায়ের নামে মেসার্স জিসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। তারা ইজারাদার দাবি করে সুরমা নদীতে লোড—আনলোড ও চলতি প্রতি নৌযান থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত জোর পূর্বক অবৈধ আদায় করছে। তাদের এই চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকার বালু পাথর ব্যবসায়ী ও নৌযান শ্রমিকরা।
এসময় চাঁদাবাজি বন্ধে দ্রুত কোন ব্যবস্থা না নিলে মঙ্গলবার থেকে তাঁরা লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ার দেন। এছাড়াও বক্তারা অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন সংগঠনের কয়েকশত মানুষ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিকে ইজারাদারদের পক্ষ থেকে বৈধ ইজারাদার হওয়া সত্বেও টোল আদায়ে হয়রানি করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে বিকেল ৩টায় উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতায় বসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব ও এ এসপি তাহিরপুর সার্কেল শাহিদুর রহমান, ওসি মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের, মান্নান ঘাট নৌপুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান। এসময় বিআইডব্লিউটিএর নির্ধারিত রেট হারে টাকা আদায় করা হবে ও চলন্ত নৌযান হতে কোন টাকা নেওয়া হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।