নারী এএসআইয়ের নির্যাতনে রক্তাক্ত গৃহকর্মী শিশু

স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারী এএসআইয়ের বিরুদ্ধে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ঘর থেকে পালিয়ে পাড়ার একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয় শিশুটি। পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
বুধবার রাত ১১টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের জামতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নারী মনিতা সিনহা সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আনারস খাওয়ার অপবাদে শিশুকে টয়লেট পরিষ্কারের ব্রাশ দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে বলে জানায় শিশুটি। হৃদয় বিদারক এমন ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আসার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার ছাড়া শিশুটিকে নিয়ে যেতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয় এলাকার মানুষ। দীর্ঘক্ষণ পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
এলাকাবাসী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের জামতলায় সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এএসআই মনিতা সিনহা গত মাসে বাসা বাড়া নেন। তিনি প্রায়ই এলাকাবাসীর সাথে খারাপ আচরণ করেন। ঘরের কাজে থাকা শিশুকে নির্যাতন করেন। আজকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারধর করলে শিশুটি ভয়ে বাসা থেকে পাড়ার একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। এলাকাবাসী মনিতা সিনহার সাথে কথা বলতে গেলে তাদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করেন। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্বার করে পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে পাঠায়।
নির্যাতিত শিশু রিয়া জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ সে মনিতা সিনহার বাসায় কাজ করে। কথায় কথায় অভিযুক্ত নারী তাকে মারধর করে। বুুধবার রাতে মার সহ্য করতে না পেরে সে পালিয়ে গিয়ে দোকানে আশ্রয় নেয়। তার বাবা মা কারো মোবাইল নাম্বার তার কাছে নেই।
বাড়ির মালিক তাজুদ মিয়া শিশু নির্যাতনের সত্যতা জানিয়ে তিনি বলেন, ১ মাস আগে মহিলা বাসা ভাড়া নেন। সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় বাসা দিয়ে দেই। কিন্তু উনার আচার আচরণ, চলাফেরা খুবই খারাপ। তাই এ মাসেই বাড়ি ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছি।
অভিযুক্ত মনিতা সিনহার সাথে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি অসুস্থ তাই কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।
সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজেদুর হাসান জানান, ঘটনাটি শুনেছি, সত্যতা পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো, আইনের চোখে সবাই সমান।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ ও মিডিয়া রিপন কুমার মোদক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে উদ্বার করেছে। তাকে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুটির বাবা বৃহস্পতিবার থানায় এসেছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।