ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্রসোনারথাল হাওরে পাউবোর অধীনে ফসলরক্ষা বাঁধের ৯২ নম্বর প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি আলমগীর কবির একই হাওরের ৪৩ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি সেলিম রেজা ও তার সহযোগী সালাহ উদ্দিন মাহতাব এবং সেলিম রেজার খালাতো ভাই জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ওই বাঁধের অভ্যন্তরে আলমগীর কবিরের ৮৪ বিঘা জমি রয়েছে। ফলে তাকে ৯২ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি করা হয়। প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী তিনি কাজ শুরু করার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি সেলিম রেজা ও তার সহযোগী সালাহ উদ্দিন মাহতাব বাধের কাজে বাধা প্রদান করেন। আর বাধার মুখে পড়ে কাজটি চারদিন বন্ধ রাখা হয়। গত মঙ্গলবার পুনরায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে গেলে সেলিম রেজার খালাতো ভাই জিয়াউর রহমান মাটি বহনকারী গাড়ির সামনে শুয়ে কাজে বাধা প্রদান করে। এতে করে আবারও বন্ধ কাজ রাখা হয়। এ বাঁধের ওপর ঘুলুয়া, মেউহারী, দৌলতপুর, চানপুর, জয়শ্রী, হরিপুর, বাদেহরিপুর, কান্দাপাড়া, দেওলা, মধুপুর, জানিয়ারচর ও রাজধরপুরসহ প্রায় শতাধিক গ্রামের ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসলের সুরক্ষা নির্ভর করে। তাই সময়মতো বাঁধের কাজ শেষ করতে না পারলে ফসলহানীর আশঙ্কা রয়েছে।
অভিযুক্ত সেলিম রেজা বলেন, ‘বাঁধটি জিয়াউর রহমানের ক্ষেতের ওপর দিয়ে গেছে। তাই জিয়াউর রহমান বাধা দিয়েছে। আমি নিজেই একটি প্রকল্পের সভাপতি। আমি অন্যের কাজে বাধা দিতে যাবো কেন? যদিও ওইখানে (প্রকল্প এলাকায়) আমাদের ফুফুর ও পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে।’
প্রকল্প এলাকায় জিয়াউর রহমান সেলিমের ফুফুর জমি বর্গা নিয়ে চাষ করছেন জানিয়ে সালাহ উদ্দিন মাহতাব বলেন, ‘সেলিম রেজার প্রকল্পে অ্যাক্সকেভেটর ও লড়ি গাড়ি সরবরাহ করেছি। সেই সুবাধে তার প্রকল্পে আমার যাতায়াত আছে। আর সেলিমের সাথে আমার সুসম্পর্ক থাকায় ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে আমাকে এতে জড়ানো হচ্ছে। আলমগীর কবির এর আগে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন যে, জিয়াউর তাঁর কাজে বাধা দিচ্ছে। আমি বা সেলিম কাজে বাধা দিচ্ছি এমনটি তিনি আগে বলেননি। আজকের (বুধবার) দেওয়া অভিযোগ ও আগে গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে ফারাক আছে।’
এ ব্যাপারে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। আর সেই জমির ফসল নষ্ট করে জমির ওপর দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য আমি বাধা দিয়েছি।’
অভিযোগকারী আলমগীর কবির বলেন, ‘পাউবোর নির্ধারিত অ্যালাইনমেন্ট (প্রকল্প বাস্তবায়ন রেখা) অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। সময়মতো কাজ করতে না পারলে ফসলহানী আশঙ্কা রয়েছে। সেলিম ও মাহতাব কেন বাধা দিচ্ছে তার সঠিক বলতে পারছি না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিরসনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’