স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জের হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ ধীরগতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহ দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী ২০২২ সনের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদনে অব্যবস্থাপনা ও অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়ায় প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদনে বিলম্ব হয়। এ কারণে কাজ শুরু করতেও বিলম্ব হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সরেজমিন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, এখনো ফসল রক্ষা বাঁধের অর্ধেক কাজ বাকি। এবারও ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোনো কোনো বাঁধে মাটির কাজই সম্পন্ন করা হয়নি। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙ্গে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যথা সময়ে কাজ শুরু করতে না পারা এবং কাজ শেষ করতে না পারায় বাঁধের কাজও টেকসই হবে না বাধগুলো অকাল বন্যার ঝুঁকিতে থাকবে।
চলতি বছর বন্যার দোহাই দিয়ে বাঁধের বরাদ্দ, প্রকল্পের পরিমাণ, পিআইসি গঠনে অনিয়ম, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, অক্ষত ও অল্প ক্ষতিস্তস্থ প্রকল্পে বিপুল বরাদ্দ দিয়ে সরকারি টাকা অপচয়ের মহোৎসব হচ্ছে বলেও স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়।
স্মারকলিপিতে, এখনো জেলার ১২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারে দুর্বাঘাস লাগানো ও কমপেকশন বাকি রয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়। সংগঠনের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা ও উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ১২ উপজেলার অন্তত পাঁচ শতাধিক পিআইসির কাজ পরিদর্শন করে এমন দৃশ্য দেখেছেন বলে দাবি করা হয়।
এসময় হাওর আন্দোলনের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হাওর ফসল রক্ষা ও বাঁধ নির্মাণে অনিময় ঠেকাতে ১০ টি দাবি জানান, এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, হাওরের নদ নদী খাল বিল খননের বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ, খননের চলমান প্রকল্পগুলো কঠোর নজরদারিতে নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মনিটরিং বাড়ানো, প্রকল্পভূক্ত জলমহাল বাধ্যতামূলক খননের আইন থাকলেও ইজারাদাররা তা মানছে না। তাদেরকে মানাতে বাধ্য করা। হাওর এলাকায় বিএডিসি, মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের খনন কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধ করা , হাওরে অপ্রয়োজনীয় ও হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি বিরোধী প্রকল্প বাস্তবায়ন বন্ধ করা, কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ যথাযথভাবে মানতে হবে, অকৃষকদের পিআইসিতে যুক্ত করা যাবে না এবং সবার সামনে গণশুনানী করে গণশুনানী স্থলেই পিআইসি ঘোষণা করতে হবে। ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। বাঁধের কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মে যুক্ত এবং নীতিমালাবিরোধী কাজ অনুমোদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যম ও কৃষক পর্যায়ের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। হাওরের বাঁধের কাজে প্রকৃত কৃষকদের যুক্ত করে যথা সময়ে অর্থ ছাড় দিতে হবে। প্রকল্পের প্রিওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক দুর্নীতি থামাতে হবে। দুর্নীতিবাজ চক্রের সঙ্গে আতাত করে প্রিওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্কে চরম দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের অর্থ অপচয় ও লোপাট বন্ধ করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী, সহ-সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল ভট্টাচার্য, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক রাজু আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আনোয়ারুল হক, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জের সভাপতি ইয়াকুব বখ্ত বাহলুল, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদনূর আহমেদ, সদস্য চন্দন রায়, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সভাপতি স্বপন দাস প্রমুখ।
- ছাতকে বাংলাদেশ এক্স ক্যাডেটস এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
- রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি যৌক্তিক