বাঁধের কাজ শেষ হয়নি/ মন্ত্রী আসার খবরে তোড়জোড়

জগন্নাথপুর অফিস
জগন্নাথপুরে বর্ধিত সময়েও হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হয়নি। কাজ দেখতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জগন্নাথপুরের নলুয়ার আসবেন এমন প্রচারণা চালিয়ে কাজ আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সরকারি সফরসূচিতে জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওর পরিদর্শন কর্মসূচি না থাকলেও এমন প্রচারণায় কাজের গতি বেড়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে নলুয়ার হাওরের ১ থেকে ২৩ নম্বর প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে এখনো ১৯ নম্বর প্রকল্প বড়ডহর এলাকায় মাটির কাজ শেষ হয়নি। ১৩-১৪ নম্বর প্রকল্পের মধ্যবর্তী ৫০০ ফুট জায়গায় এখনো মাটি পড়েনি। ১৯ নম্বর প্রকল্পে শ্রমিকরা কাজ করছেন।
প্রকল্পের সভাপতি সাজিদুর রহমান বলেন, আরও দুই তিন দিন লাগবে মাটির কাজ শেষ হতে। আমি অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে কাজ শেষ করতে চেষ্টা করছি। তিনি বিলম্বে কার্যাদেশ পাওয়ায় কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান। এছাড়াও ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ নম্বর প্রকল্পের কাজের মান সন্তোষজনক নয়। সব প্রকল্পের ঘাস লাগানো ও ফিনিশিং কাজ বাকি। ১৩-১৪ নম্বর প্রকল্পের মধ্যবর্তী ৫০০ ফুট জায়গায় এখনো মাটি পড়েনি। ফলে হাওর এখনো অরক্ষিত অবস্থায় আছে।
১৩ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি বলেন, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্রকল্পের মধ্যবর্তী প্রায় ৫০০ ফুট জায়গা আমাদের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় আমরা কাজ করতে পারছি না। তবে এখন নতুন করে কাজ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
উপজেলার নলুয়ার হাওরপাড়ের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, হাওরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজের মান এবার সন্তোষজনক নয়। পাশাপাশি দুই দফা বর্ধিত সময়ে এখনো কাজ শেষ না হওয়া দুঃখজনক। এখন প্রতিমন্ত্রী আসবেন দোহাই দিয়ে কাজ শেষ করতে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ অনেক প্রকল্পে এখনো কাজ শেষ হয়নি। হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার নিয়ে এবার চরম অবহেলা ও গাফিলতি করা হয়েছে। নীতিমালা মেনে কাজ করলে এমন পরিস্থিতি হতো না। হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করার কথা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঘাস লাগানো সহ ফিনিশিং কিছু কাজ বাকি রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী জগন্নাথপুর আসতে পারেন এমন মৌখিক খবর পেয়ে সবাই কে কাজ শেষ করতে বলেছি। ১৩-১৪ নম্বর প্রকল্পের মধ্যবর্তী সামান্য জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ না থাকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। এখন নতুন করে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জগন্নাথপুর আসার কোন সরকারি কর্মসূচি নেই। দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় হাওর দেখবেন। তিনি উপজেলায় ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ বলে দাবি করেন।