আলী আহমদ, জগন্নাথপুর
জগন্নাথপুরে বাঁধের গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্য়োগে ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত সোমবার সরেজমিনে জেলার অন্যতম জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওর পরিদর্শনকালে একটি বেড়িবাঁধের কাজ গোড়া থেকে মাটি তোলে কাজ করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কামারখালি নদীর তীরবর্তী এলাকায় দাসনাগাঁও নামকস্থানে ৩ নম্বর প্রকল্পের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের একপাশে কামারখালি নদী ও আরেকপাশে নলুয়া হাওর। বাঁধের পাশ থেকে নদীর পাড় থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। এতে করে নদীতে পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে পানির চাপে বাঁধটি ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে ফসলডুবির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
৩ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি হিমাশীষ দাস জানান, হাওরে তীব্র মাটি সংকট দেখা দিয়েছে। তাই নদীর চর এলাকা থেকে মাটি তোলা হয়। বাঁধের ক্ষতি হয় এমন স্থান থেকে মাটি না কাটার জন্য শ্রমিকদের বলেছি। এ প্রকল্পের ১.৮৯০ কিলোমিটার কাজের জন্য ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে কাজের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এখনো অনেক প্রকল্পে কাজ শুরু হয়নি। কিছু কিছু প্রকল্পে ধীরগতি কাজ চলছে।
নলুয়া হাওর পোল্ডার-১ এর আওতাধীন ২, ৫, ৮, ৯, ১০, ১১ নম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। কয়েকটি প্রকল্পে নামমাত্র কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানান, এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় ২৪ কিলোমিটার এলাকায় ৫০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হওয়ার কথা। পাউবোর নীতিমালা অনুয়ায়ী ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। কাজের দেড়মাস অতিবাহিত হলেও শতভাগ একটি বাঁধের কাজও শুরু হয়নি। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে।
নলুয়া হাওরের কৃষক সাইদুর রহমান জানান, প্রতিবছরই হাওরে সময়মতো কাজ শুরু হয় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা দেখা দিলে তখন কাজে তাড়াহুড়া শুরু হয়। এতে করে ফসলডুবির আতঙ্ক দেখা দেয়। তখন কৃষকরা তাঁদের হাওরের সম্পদ রক্ষায় হাওরে লড়াই করতে হয়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির জগন্নাথপুর উপজেলার আহ্ববায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা বেড়িবাঁধের কাজে উদ্বিগ্ন। কাজের দেড়মাস চলে গেলেও একটি বাঁধের শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। প্রাক্কলন অনুয়ায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে তিনি আহবান জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী জানান, বাঁধের গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করতে আমরা নিষেধ করেছি। তিনি জানালেন, এ উপজেলায় ৫০টি প্রকল্পের মধ্যে ৪৭টি প্রকল্পের কার্যাদশ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে আমরা কাজ করছি।
- তাহিরপুর উপজেলা সদরে নেই শহীদ মিনার
- অস্ত্র মামলায় সুনামগঞ্জে একজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড