মো. মোশফিকুর রহমান
মৌসুমের শুরুতেই কাঁঠাল, লিচু, আম, আনারসে বাজার সয়লাব। চারিদিকে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে মধুমাস জৈষ্ঠ্যের আনারাস, আম, কাঁঠাল ও লিচু সহ বাহারি ফল। মৌসুমী সব ধরনের ফলের একটা কদর বরাবরই থাকে। তবে যদি সে ফল মৌসুমের আগেই পাওয়া যায় তাহলে চাহিদা তার একটু বেশিই থাকে। পাশাপাশি সবার আগ্রহ থাকে বেশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, আলফাত স্কয়ারের ফলের বাজারে সকাল থেকেই পাইকারি বিক্রেতারা আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস সহ হরেকরকম ফল বিক্রি করছেন। ক্রেতারাও দরকষাকষি করে চাহিদা মতো ফল কিনছেন। এদিকে শহরের পুরাতন কোর্ট পয়েন্টে শহরের সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট বসেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম কাঁঠাল,লিচু, আম,আনারসে সয়লাব প্রায় পুরো বাজার। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এসব কাঁচা-পাকা কাঁঠাল সহ অন্যান্য ফল সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দর-কষাকষি করে কিনছেন ব্যবসায়ীরা। দাম চড়া হলেও সাধারণ ক্রেতা ও পাইকাররা ভিড় করছেন বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন রকমের আম, লিচু রাজশাহী থেকে বাজারে আসছে। সিলেটের শ্রীমঙ্গল থেকে আনারস, কাঁঠাল, সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার হাশাউড়া থেকে আনারস আসছে। বিক্রেতারা বলছেন,হাশাউড়া এলাকার আনারস খুব মিষ্টি, সুস্বাদু। চাহিদাও বেশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, সদর উপজেলার হাশাউড়ায় এবার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ হয়। ৩০ টন করে পার হেক্টর জমিতে ১৮ মেট্রিকটন আনারসের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলার ছাতক, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় লিচু সহ প্রত্যেক উপজেলায় আম, কাঁঠাল হচ্ছে। এই বছর সুনামগঞ্জে ধানের পাশাপাশি এসব ফলও ভালো হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহতাব উদ্দিন বলেন, আমি বিভিন্ন ফলের ব্যবসা করি। এখন আনারস ক্রয় করে সুবিধাজনক সময়ে বিক্রি করি। হাশাউড়া আনারসের চাহিদা বেশি। প্রতি হালি ২৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। সুস্বাদু আনারস এগুলো, তাই মানুষ এগুলো বেশি কিনে নেয়।
নতুন পাড়ার ফল ব্যবসায়ী সুনিল তালুকদার বলেন, আমি শুধু কাঁঠাল বিক্রি করছি। এইমাত্র চালান এনেছি। এরই মধ্যে তিনজন ক্রেতা কিনেছেন। প্রতিটা কাঁঠাল, ১০০-২০০ টাকা করে বিক্রি করছি। কাঁঠালের দামে ক্রেতারা খুশি।
সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের রাজিব মিয়া এসেছেন শহরে। তিনি বাজার শেষে লিচু,আম কিনতে এদিকে সেদিক ছুটাছুটি করছেন। পাঁচ/ সাতটি দোকান ঘুরে অবশেষে দুই মুটি লিচু( প্রতি মুটিতে ৫০ টি লিচু) এবং এক কেজি আম কিনেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিচুর দামটা বেশি। কি করব বাড়ীতে সন্তানেরা অপেক্ষা করছে। ফল কিনে নিতে হবে। দুই মুটি লিচু ও এক কেজি আম কিনেছি।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, ফলগুলো বাইরের জেলা থেকে আসছে, সেজন্য দাম বেশি। তবে সিন্ডিকেট করে যদি কেউ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে চেষ্টা করে, তাহলে আমরা অবশ্যই আইন প্রয়োগ করব। এক সপ্তাহ পর পর্যাপ্ত পরিমাণে আম, কাঁঠাল সহ অন্যান্য ফল আসবে। তখন দামটাও কমবে।
- উপহারের ঘরেও এতো অনিয়ম
- ছাতকে চোরাকারবারীদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি