যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
এস আই (অবসরপ্রাপ্ত) নীল কমল স্ত্রী সন্তান ও আত্মীয় স্বজন সহ ২৮ জন নিয়ে গাজিপুর থেকে এসেছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী এলাকা রাজারগাঁওয়ে শ্রীশ্রী অদ্বৈত জন্মধাম পণতীর্থে পুন্যস্নানে অংশ নিতে। পুন্যস্নান শেষ করে সোমবার সকালে অটোরিকশা করে ফিরছেন তারা। আব্দুজ জহুর সেতু সংলগ্ন সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে পরবর্তী গাড়ির অপেক্ষায় আছেন।
ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত এস আই নীল কমল জানান, গাজিপুর থেকে এসেছি। একসঙ্গে ২৮ জন পুন্যস্নানে অংশ নিয়েছিলাম। ফেরার পথে আমাদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। প্রশাসন নির্ধারণ করে দিয়েছে অটোরিকশা ভাড়া ১৭০ টাকা জনপ্রতি, সেখানে ২০০ টাকা করে ভাড়া গুনতে হয়েছে।
শুধু নীল কমল নয়, আব্দুজ জহুর সেতু যাওয়া বেশির ভাগ যানবাহনের শ্রমিকরা যাত্রী সাধারণের নিকট হতে বাড়তি ভাড়া আদায় করেছেন। এমন অভিযোগ পূন্যার্থিদের।
রবিবার থেকে তাহিরপুরের শ্রীশ্রী অদ্বৈত জন্মধাম পণতীর্থে পুন্যস্নান এবং হযরত শাহ আরেফিন (র.) ওরশ মোবারকে লাখো মানুষের মহামিলনমেলা জমে উঠেছে উৎসবস্থল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনজোয়ার নেমেছিল দুই ধর্মের পুন্যার্থীদের। রবিবার রাত ৯টা ১৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ড থেকে ৪ টা ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে (মহাবারুণী) গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জামালগঞ্জের সাচনা বাজার ইউনিয়ন এলাকার শুকদেবপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান জানান, আমি আমার প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে নিয়ে মেলায় গিয়েছিলাম। আসার পথে মোটরসাইকেল ভাড়া ৮০০ টাকা দিয়েছি। আমি গরীব মানুষ কত অনুনয়-বিনয় করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি, ভাড়া বেশি দিতে হয়েছে।
লাউড়েরগড় এলাকার বাসিন্দা মোটরসাইকেল চালক উজ্জ্বল বলেন, রাস্ত -ঘাটে মেঘ বৃষ্টিতে কাঁদা লেগে আছে, খুব কষ্ট হয় গাড়ি চালাতে। এইজন্য ভাড়া বেশি নিতে হয়।
একই এলাকার বাসিন্দা মোটরসাইকেল চালক শামিম আহমেদ বলেন, প্রশাসন ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের খরচ বেশি, মেঘ বৃষ্টির কারণে কষ্টও হয়। জনপ্রতি ৩০০/৪০০ টাকা ভাড়া নিতে হচ্ছে।
গত ১৪ ই মার্চ সোমবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পণতীর্থ গঙ্গাস্নান ও বারুণি মেলা এবং হযরত শাহ আরেফিন (রঃ) এর বার্ষিক ওরস মোবারক সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, সুনামগঞ্জ আব্দুজ জহুর সেতু থেকে মেলা পর্যন্ত মোটর সাইকেল ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ টাকা। সিএনজি এবং লেগুনা ভাড়া জনপ্রতি ১৭০ টাকা করে আদায় করতে পারবে। কিন্তু সেই নিয়ম কানুন না মেনে পুলিশের উপস্থিতিতেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন চালকরা।
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মহিবুল ইসলাম বললেন, যাত্রীদের যাতে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে না হয়, সেজন্য আমরা সার্বক্ষণিক দেখবাল করেছি। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখনো পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করে নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।