ধর্মপাশা প্রতিনিধি
ধর্মপাশা উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার আব্দুল মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে সেলবরষ ইউনিয়নের গাংচিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত বুধবার বিকেলে গাংচিল মৎস্যজীবীর সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক বেনোয়ার হোসেন খান পাঠান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বরারব লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধর্মপাশা উপজেলাধীন হিরাজান রাণী উদ্ধার ও উন্দানীর বিল জলমহাল ১৪৩০ থেকে ১৪৩২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ইজারা নেওয়ার জন্য গাংচিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেটেড ইজারা ডাকে অংশগগ্রহণ করে। আর এ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সেলবরষ ইউনিয়নের ভাটাপাড়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে স্বপন খানের কাছ থেকে গত ৩ এপ্রিল লাবিয়ারপাচুর মৌজার (জেএল নং-৩২) ২২১ নম্বর খতিয়ানের ৩৯০ নম্বর দাগে একটি ঘর ভাড়া নেওয়া হয় এবং সেই অনুযায়ী ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়। পরের দিন ওই চুক্তি নামার একটি ছায়ালিপি উপজেলা সমবায় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তিনামার ছায়ালিপিতে দাগ নম্বর ৩৯০ এর পরিবর্তে ৩৫১পরিলক্ষিত হয়। ফলে সমবায় কার্যালয় থেকে দাগ নম্বরটি সংশোধন করে পুনরায় চুক্তিনামা সম্পাদনের জন্য বলা হয়। ওই দিনই দাগ নম্বর সংশোধন করে পুনরায় চুক্তিনামা সমবায় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। যার রিসিভ কপি সমিতির সদস্যদের কাছে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু ভুল দাগের চুক্তিনামার ছায়ালিপি ভুলক্রমে সমবায় কার্যালয়েই থেকে যায়। গত ৩ মে উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক রুহুল আমিন ভুল করে সংশোধিত চুক্তিনামার পরিবর্তে ২৫১ দাগ সম্বলিত চুক্তিনামার ছায়ালিপি সার্ভারের কাছে জমা দেন। সার্ভেয়ার ৫ মে গাংচিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্যদেরকে অবগত না করে জলমহাল ও চুক্তিনামার ঘর পরিদর্শনে যান। এ সময় সার্ভেয়ার ৩৯০ নম্বর দাগে সমিতির ঘর দেখতে পান। কিন্তু তিনি বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেন। এর দুইদিন পর সমবায় কার্যালয় থেকে রুহুল আমিন সংশোধিত চুক্তিনামার ছায়ালিপি সার্ভেয়ারের কাছে নিয়ে গেলে সার্ভেয়ার তা গ্রহণ করেননি।
উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারি পরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, সমিতির লোকজন চুক্তি নামার কপি দেওয়ার সাথে সাথেই দাগ নম্বর ভুলের বিষয়টি ধরা পডছে। পরে তাদেরকে দাগ নম্বর সংশোধন করে পুনরায় চুক্তিনামার কাগজ অফিসে জমা দেওয়ার জন্য বললে তারা সেদিনই সংশোধিত চুক্তিনামার কাগজ জমা দেয়। কিন্তু দাগ নম্বর ভুল সম্বলিত চুক্তিনামা কপিটি অফিসে রয়ে যায়। ওই সময় টানা তিনদিন অফিস বন্ধ থাকার কারণে আমি ছুটিতে চলে যাই। অফিস খোলা হলে সংশোধিত চুক্তিনামা সার্ভারের কাছে নিয়ে গেলে সার্ভেয়ার তা গ্রহণ করেন নি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ বলেন, সমিতির লোকজন চুক্তিনামা কম্পিউটারে টাইপ করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছিল। পরবর্তীতে দাগ নম্বর সংশোধন করে আমাদের এখানে জমা দেওয়া হয়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেনোয়ার হোসেন খান পাঠান বলেন, ৩৯০ দাগে ভাড়া নেওয়া আমাদের সমিতির ঘর জলমহালের তীরবর্তী। সে অনুযায়ী আমরাই ইজারা পাবো। কিন্তু আমরা যাতে জলমহাল ইজারা না পাই সে জন্য সার্ভেয়ার সংশোধিত চুক্তিনামা গ্রহণ না করে আমাদের হয়রানী করছে। বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করা হউক।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার আ. মোনায়েম খান বলেন, সমবায় কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত চুক্তিনামা অনুযায়ী তদন্ত করা হয়েছে। সেই চুক্তিনামায় ৩৫১ দাগে ঘরটি রয়েছে। সমিতির পক্ষ থেকে সংশোধিত চুক্তিনামার কাগজ পাওয়া গেলে বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেশ চন্দ্র সরকার বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়ট তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- পাখির বাসা ভাঙতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
- করোনাকালে ১৫% মেয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে