স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জের আব্দুজ জহুর সেতু থেকে পড়ে সুরমা নদীতে ডুবে মারা গেলো স্কুল শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম সাঈদা তানজিম রশনি। সুনামগঞ্জ সরকারি সতীশ চন্দ্র (এসসি) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। মেয়েটি নদীতে পড়ে আত্মহত্যা করেছে, না কি অসাবধানতায় মারা গেছে, এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিকেলে নিহতের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের মডেল টেস্ট পরীক্ষা শেষ করে দুই বন্ধু খাদিজা আক্তার ইমাকে নিয়ে সেতুতে ঘুরতে যায় তানজিম। একপর্যায়ে সেতুর র্যালিংয়ে ওঠে হাটতে চায় সে। বান্ধবি ইমা নিচে থেকে তার হাত ধরে রাখে। হঠাৎ করে হাত ছেড়ে নদীতে পড়ে যায় সে। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে।
সঙ্গে থাকা বান্ধবি খাদিজা আক্তার ইমা বললো, বিদ্যালয়ে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান মডেল টেস্ট পরীক্ষা ছিলো। পরীক্ষা শেষ করে সেতুতে ঘুরতে যায় তারা। হঠাৎ করে তানজিম সেতুর র্যালিংয়ে ওঠে। আমি তার হাত ধরে রাখি। একপর্যায়ে আমাকে হাত ছাড়তে বলে। আমি হাত ছাড়তেই সে নদীতে পড়ে যায়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্বজনরা।
নিহত তানজিম শহরের ষোলঘর এলাকায় মা মুক্তা মুর্শেদার সঙ্গে থাকতো। তার বাবা রুহানুর রহমান রুহানের সঙ্গে মা’র বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে ১৭ বছর আগে।
ঘটনার পর ষোলঘরের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, দুর্ঘটনায় আহত মা মুক্তা মুর্শেদা বিছানায় বসে অঝোর ধারায় চোখের পানি ঝরাচ্ছেন।
বললেন, মেয়েটির বাবা আরেক বিয়ে করার পর ২০০৬ ইংরেজিতে সংসার ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন তিনি। এই মেয়েটিকে আরেক ভদ্রলোক দত্তক নিয়েছিলেন ২০০৯ সালে। শহরের মুক্তরপাড়ার নিঃসন্তান ওই ব্যক্তির স্ত্রী মারা যাবার পর, তিনি নিজেও (দত্তক গ্রহিতা) অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গেল ডিসেম্বর মাসে মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন মুক্তা মুর্শেদা। মুক্তা মুর্শেদা সুনামগঞ্জের কালেক্টরেটে অফিস সহায়কের চাকুরি করেন। ভাইয়ের বাসার একটি কক্ষে দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন তিনি।
মুক্তা মুর্শেদা জানান, প্রতিদিনের মতোই মেয়েটি স্কুলে গেছে। যাওয়ার সময় প্রতিদিন অটো ভাড়া বিশ টাকা নিয়ে যায়। আজও সেভাবেই নিয়ে গেছে। ভাংতি টাকা এনে রাখার জন্য বলেছিল। তিনি তার জন্য অনেকগুলো পাঁচ টাকার কয়েন এনে রেখেছেন। খবর পেয়ে তিনি বিশ^াস করতে পারেন নি তার মেয়ে এভাবে মারা গেছে।
লাশের সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি শেষে সুনামগঞ্জ সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান বললেন, মেয়েটির শরীরে কোন আঘাত নেই। সঙ্গে মোবাইল বা অন্য কোন ডিভাইসও ছিলো না।
সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, আব্দুজ জহুর সেতু থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সুরতহালের জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি।
- মধ্যনগরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
- ছাতকে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ১, আহত শতাধিক