ভালো খবর হলো এই যে, প্রত্যাশা মোতাবেক ৩০ মার্চ সারা দেশের নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে সম্মানীর বিনিময়ে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কার্যক্রমে সুনামগঞ্জ জেলার দুইটি হাসপাতাল যথাÑ সুনামগঞ্জ সদর ও ছাতক হাসপাতাল যুক্ত রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন প্রতিদিন ৩ জন করে চিকিৎসক বিকাল ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত হাসপাতালের চেম্বারে বসে নির্ধারিত সম্মানী গ্রহণ করে রোগীদের সেবা প্রদান করবেন। প্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষা নিরীক্ষাই হাসপাতালে করা হবে। যেকোনো নতুন কর্মসূচিই বাস্তবায়নের প্রথম দিকে কিছু সীমাবদ্ধতা, সমস্যা ইত্যাদির সম্মুখীন হয়ে থাকে। আলোচ্য সেবাটিও এসব মোকাবিলা করে একসময় মানসম্মত ও গ্রহণযোগ্য কর্মসূচিতে পরিণত হবে বলে আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই। এই বিশ্বাস তখনই সফলতা পাবে যখন এর সাথে জড়িত চিকিৎসক ও অপরাপর স্বাস্থ্যকর্মীরা আন্তরিকতা ও মানবিকতা নিয়ে কাজ করবেন। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি জনসাধারণের কাছে ব্যাপক প্রচার আবশ্যক বলে আমরা মনে করি। হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে আমাদের জনসাধারণের মাঝে এক ধরনের উন্নাসিক মানসিকতা রয়েছে। তারা ভাবেন হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসা পাওয়া যায় না। মানুষের এই নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তন ঘটিয়ে রোগীদের হাসপাতালমুখী করতে হবে। সরকাাির-বেসরকারি সকল প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে জনগণকে সচেতন করতে হবে। আমরা চাই প্রাতিষ্ঠানিক এই সাশ্রয়ী চিকিৎসা পদ্ধতিটি স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা পাক।
তবে সমস্যা হলো এই কর্মসূচি নিয়ে খোদ চিকিৎসক সম্প্রদায় থেকেই আপত্তির আভাস মিলেছে। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিভিত্তিক বৈঠকে বিএমএ সভাপতি যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়া এই কর্মসূচি চালু করায় এর সফলতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে চিকিৎসাসেবা দেয়ার বিষয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। বিএমএ সভাপতি হয়তো নিজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টিকে দেখছেন। আমরা মনে করি হাসপাতালের সম্মানীর বিনিময়ে সেবা দানের কর্মসূচিটি যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে এ নিয়ে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি যথেষ্ট ইতিবাচক হবে। আর প্রস্তুতির ঘাটতির বিষয়টি পর্যায়ক্রমিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গতা অর্জন করতে পারবে। সুতরাং তাঁর এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার দরকার নেই। বরং তিনি চিকিৎসকদের নেতা হিসাবে সকল চিকিৎসককে এ কাজে আন্তুরিকভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানালে ভালো সুফল মিলবে। আর যদি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ক প্রচলিত পদ্ধতিকে বহাল রাখতে কৌশলী ভূমিকা অবলম্বন করেন তাহলে আমাদের কষ্টের শেষ থাকবে না।
চিকিৎসার পিছনে মানুষের এখন প্রচুর ব্যয় করতে হয়। বেসরকারি চিকিৎসা কাঠামো অতিমাত্রায় বাণিজ্যিকরণ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ চিকিৎসাকেন্দ্রে আসলে রীতিমতো ভয় পান। অনেকের যথেষ্ট টাকা থাকে না বলে মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। অনেকে চিকিৎসা শুরুই করেন না। এই ধরনের অমানবিক অবস্থার অবসান ঘটা উচিৎ। এবং আলোচ্য বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিটি ওই লক্ষ্য অর্জনের প্রাথমিক একটি ধাপ হিসাবে পরিণত হতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সরকার যে ফি নির্ধারণ করেছেন তা গ্রহণযোগ্য। এই জায়গায় যাতে রোগীরা বাড়তি কোনো চাপে না পড়েন সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি হাসপাতালের রোগ পরীক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তারও একটি নীতিমালা ও ফি নির্ধারণ করা আবশ্যক। হাসপাতালে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার সকল ধরনের যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা ও এগুলোকে সচল রাখাসহ পর্যাপ্ত ট্যাকনিশিয়ানের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
পরীক্ষামূলকভাবে যে কর্মসূচিটি শুরু হয়েছে তার দিকে সকলের নজর রাখতে হবে এবং এই ব্যবস্থাকে অগ্রসর করে নিতে যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা আবারও এই ব্যবস্থার সার্বিক সফলতা কামনা করি।
শিরোনাম:
- ‘ডাইনামিক ইংলিশ গ্রামার এন্ড কম্পোজিশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- বিশ্বম্ভরপুরে চান্দিনা ভিটের লাইসেন্স বিতরণ
- বিশ্বম্ভরপুরে জাতির পিতার ‘জুলিও কুরি’ পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন
- সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আন্ত:ক্লাব বির্তক প্রতিযোগিতা
- বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তিতে জামালগঞ্জে সভা