হুমকির মুখে মাটিয়ান হাওর/ হাওরের ফসল রক্ষায় বালির বাঁধ

স্টাফ রিপোর্টার, তাহিরপুর
এবারও হুমকির মুখে রয়েছে তাহিরপুর উপজেলার হাওরাঞ্চলের বোরো ফসল। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো কোনো কোনো স্থানে কাজ শুরুই হয়নি। সময়মতো হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় বছরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকদের। সময়মত বাঁধের কাজ শুরু না হওয়াতে তারা ফসল ঘরে উঠাতে পারবেন কিনা সেই আতঙ্কে আছেন। প্রতি বছরই অকাল বন্যা, শিলাবৃষ্টি ও খড়ায় ফলসহানি হয়, তবু আশায় বুক বেঁধে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন কৃষকরা।
সরজমিনে উপজেলার হাওরগুলো ঘুরে দেখা যায়, মাটিয়ান হাওর রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্পের গাজীপুর গ্রামের উত্তর দিকে ‘পাকারশি ক্লোজার বাঁধ’। এই বাঁধ নির্মাণে প্রতি বছর হাওরপাড়ের কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিদের বিশেষ নজরে থাকে। কিন্তু এ বছর বাঁধ নির্মাণের শুরুতেই প্রকল্পের লোকজন পাশর্^বর্তী কেন্দুয়া নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকায় এটি মাটিয়ান উপ-প্রকল্পের ৭৫ নম্বর প্রকল্প। বাঁধটি নির্মাণের বিপরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৪ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবছর।
গাজীপুর গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্পের গাজীপুর গ্রামের উত্তর দিকে ‘পাকারশি ক্লোজার বাঁধটি’ খুবই ঝঁকিপূর্ণ বাঁধ। বাঁধটি বালি দিয়ে নির্মাণ করায় মাটিয়ান হাওরের সব ফসল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাঁধটি শক্তিশালী ও মজবুত করতে হলে নির্মাণ কাজের সম্পূর্ণ বালি ফেলে পুনরায় মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
ধরুন্দ গ্রামের মুছা মিয়া বলেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করে শুরু থেকেই বাঁধ নির্মাণ কাজ করছে। কাজ উদ্বোধনের সময়েও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. শওকতুজ্জামান বলেন, কাজের শুরুতে প্রকল্পের সভাপতিকে বলছিলাম পানির লেবেল পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে বাঁধের কাজ করার জন্য। পরে শুনতে পাই পুরো বাঁধের কাজ ড্রেজার দিয়ে নির্মাণ করছে। এমন অভিযোগ শুনতে পেরে কাজ বন্ধ রেখে মাটি দিয়ে নির্মাণ করতে নির্দেশনা দিয়েছি।
মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্প ৭৫ নং প্রকল্পের সভাপতি মলাই মিয়া বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলীর নির্দেশেই বালি দিয়ে বাঁধের কাজ শুরু করেছিলাম। এখন আবার তাদের নির্দেশনা পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা যাবে না। অভিযোগ পেয়ে সংশ্লিষ্ট পিআইসিকে কাজ বন্ধ রাখতে নিষেধ করেছি।