স্টাফ রিপোর্টার
মাত্র দুই মাস বয়সেই জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শিশু আনাস। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেনা তার পরিবার। ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, জটিল এই রোগের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অপারেশন করাতে হবে। অপারেশন পরবর্তী বেশ কয়েকদিন রাখতে হবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে। এতে অন্তত ৩—৪ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। অর্থের কাছে অসহায় হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে অনিশ্চিত জীবন পার করছে আনাস।
রানিম ইসলাম আনাস সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ময়নার পয়েন্ট এলাকার তাইজুল ইসলাম রকি ও রত্না বেগমের একমাত্র সন্তান। জন্মগত ভাবেই ডাইয়াফ্রাগমেটিক হারনিয়া নামক জটিল রোগে আক্রান্ত আনাস। জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভোগছে সে। আনাসের বাবা রকি পেশায় একজন গাড়ি চালক। ভাড়ায় অন্যের গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান তিনি। উপায় না পেয়ে অসুস্থ আনাসকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল থেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ফিরে এসেছেন।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ছাড়পত্রের তথ্যানুযায়ী, অসুস্থ হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয় আনাস। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা ডাইয়াফ্রামেটিক হারনিয়া নামক রোগ সনাক্ত করেন। পরে ৮ তারিখ ঢাকায় নিয়ে অপারেশন করার জন্য হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তবে ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করানোর অর্থ না থাকায় কোন উপায় না পেয়ে আনাসকে নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চলে আসেন আনাসের বাবা। পরে সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মেডিকেল অফিসার ডা. সৈকত দাসের নজরে আসলে আনাসের চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন।
ডা. সৈকত দাস বলেন, ২ মাস বয়সী শিশু আনাস আমার কাছে চিকিৎসা নিতে আসলে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর জন্মগত মধ্যচ্ছদা পর্দায় ত্রুটি ধরা পড়ে। মেডিকেলের ভাষায় এই রোগটিকে ডাইয়াফ্রামেটিক হারনিয়া বলা হয়। এই মধ্যচ্ছদা পর্দা বা ডায়াফ্রাম এর উপরে থাকে হার্ট ও ফুসফুস এবং নিচে থাকে লিভার, পাকস্থলী, খাদ্যনালী সহ অন্যান্য অংশ। অনেক সময় এই ডায়াফ্রামে ত্রুটি থাকলে খাদ্যনালী উপরে উঠে ফুসফুস ও হার্ট এর সাথে চলে আসে। আনাসের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। আনাস ইতিমধ্যে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এডমিটেড ছিল। উনারা পরবর্তী চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেছেন, কিন্তু আনাসের মা বাবার এমন সামর্থ্য নেই যে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিবে। চিকিৎসার জন্য অন্তত তিন লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সেজন্য অগত্যা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালেই নিয়ে এসেছে। শিশু আনাসের চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
আনাসের বাবা তাইজুল ইসলাম রকি বলেন, জন্মের পর থেকেই আমার ছেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভোগছে। আনাস আমাদের একমাত্র সন্তান। গত দুই তারিখে সিলেট নিয়ে জানতে পারি তার হার্টে সমস্যা হয়ে গেছে। তারা ঢাকায় রেফার করেন কিন্তু ঢাকা নেয়ার মতো টাকাই আমার কাছে নেই। এতো লক্ষ টাকা দিয়ে অপারেশন কিভাবে করবো। তাই সুনামগঞ্জে নিয়ে আসছি। বিত্তবানরা এগিয়ে না আসলে আমার ছেলের চিকিৎসা সম্ভব না।
- নদীতে চাঁদাবাজি বন্ধে জামালগঞ্জে মানববন্ধন
- প্রতিষ্ঠিত হলো জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ