এনামুল কবির
আমার পিতা সাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। ধর্মতত্ত্বের দিক থেকে ছিলেন ‘শোকরগোজারি’, রাজনীতিতে অনুল্লেখযোগ্য একজন মানবতাবাদী ও রক্ষণশীল- দুই’ই; ছিলেন আজন্ম অসাম্প্রদায়িক। নৈতিকতাকে উচ্চ মূল্য দিতেন, তাঁর আত্মনিবেদনের সবটা জুড়ে ছিলো সহজ-সরল এবং প্রগাঢ় ধর্মীয় এক জীবনযাপন। জীবনভর তিনি সেটা করে গেছেন। তাঁর সন্তান হিসেবে দেখেছি ক্ষমাকে করে নিয়েছিলেন জীবনাদর্শ, স্রষ্টার গুণ ও মানবীয় সৌন্দর্যে ছিলো তাঁর ঈর্ষণীয় টান এবং পরিচ্ছন্নতার পবিত্রতা বা সৌন্দর্যে ছিলেন অনড়। এসব তাঁর ব্যক্তিচরিত্রের একটা দিক বটে, সবকিছুর উপরে তিনি ছিলেন একজন সাধারণ মানুষই।
এরকম একজন মানুষকে নিয়ে কেন এই লেখা, সেটা বলি- তাঁর সময়ের কথা যখন মনে পড়ে, ভাবি আমাদের কোথাও তাঁর এই জীবন ও সময় কাজে লাগতে পারে। এছাড়া জীবন তো এক পরম্পরাই। আমার পিতা তীব্র সামাজিক মানুষ ছিলেন, তাঁর দার্শনিক টাইপ কথাবার্তা স্থানীয় পর্যায়ে একটা বিশিষ্টতা দিয়েছিলো বলেই মনে হয়। মানুষ প্রশংসার কাঙাল এই জন্য কিনা জানি না, প্রশংসাকে ভালোচোখে দেখতেন না; মনে করতেন এসব আমাদের ক্ষতির কারণ হতে পারে। (আমরা যখন কামু পড়বো, তাঁর- দ্য ফল, দেখবো- ‘সবাই যখন প্রশংসা করবে, তখনই তোমার দুঃসময়।’) তিনি নিজেকে জাহির করাও মনে করতেন মন্দ জিনিস। এখানে এটাও বলি আমার শ্রদ্ধেয় পিতা পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিলেন না, ভাবই ছিলো তাঁর কেন্দ্রে। এর আরও একটা কারণ, ভাবি তাঁর সেই সময়ের কথা ও জীবনদৃষ্টির অংশত রূপটা যদি লিখে রাখা যেত! ‘অচেতনে-চেতন’ হতে একটা নির্দেশনা পেতাম আমরা- ভাইবোনেরা, পারিবারিক থেকে সামাজিক ইতিহাসে এসব হতে পারতো একটা রসদ। ইতিহাস তো মানুষেরই ইতিহাস, এখানে যে সমস্ত রসদ বা উপাদান নিয়ে ব্যক্তিমানুষ বা গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষের জীবনের সাক্ষাৎ আমরা পাই, এর সবটা হবে সে ইতিহাসেরই বিষয়বস্তু। এখানে ব্যক্তিমানুষ হলেও আব্বা ছিলেন তাঁর সময় ও সমাজের মানুষ, এদিক থেকে তাঁকে কিঞ্চিৎ স্মরণ হতে পারে আমাদের সেই সময়েরও পাঠ। কিন্তু এখন সে সুযোগ নেই, তাঁকে নিয়ে লিখতে স্মৃতিরই দ্বারস্থ হতে হবে দেখছি! বাস্তবে আমরা রয়ে গেছি বড্ড রকমের অলস, সময়ের কাজটা আমরা সময়ে করতে পারি? সেনেকা কবে এই সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন, সবসময় দেখা গেছে মানুষের হাপিত্যেশটা আসে এর থেকে; তাই আজও এই প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ রয়ে গেছে সময়টা আমরা কীভাবে খরচ করি। এখানে এখন আব্বার এই কথাটা বেশ মনে পড়ছে, তিনি বলতেন, ‘হারিয়ে ধন পাওয়া বিষম দায়’। সময় এর মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান সন্দেহ নেই। এখন আব্বা নেই, একবছর হয়ে গেলো; তাঁর স্মৃতি যে আমাদের সঞ্জীবনী!
আমার আব্বার জন্ম বৃটিশ ভারতে। বৈ-মাত্রেয় ছাড়াও তাঁরা ছিলেন দুইবোন ও দুইভাই। এদিক থেকে তিনি ছিলেন আমার দাদাদাদি’র তৃতীয় সন্তান। সবার ছোট পেয়ারা, আমার এই ফুফুর বয়স তখন ছয়মাস, তখন তাঁদের মা মারা যান। মা ফুলের মৃত্যুর পর তাঁরা আশ্রয় নেন মামাবাড়ি। নানা রুশন আলী তখন নেই, বেশ আগে মারা গিয়েছেন; এখানে আছে কেবল ভূ-স্বামীর সম্বল হারানোর গল্প। (অবশ্য পরবর্তীতে এর অনেকটা তাঁরা পুনরুদ্ধার করেছিলেন।) এরকম একটা সময়ে তাঁদের মামারা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তাঁদের ভরণপোষণ। এই চার ভাইবোনের সম্মিলনও বেশিদিন এক থাকেনি, তিন-চার বছর পর একবর্ষায় নিজগ্রাম ডুংরিয়াতে এলে, মালা’র ছোট যে আসকর আলী, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। এটা তাঁদের মামারা মেনে নেননি, সচেতনভাবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে মনে করেছিলেন। তাই এই খবর পেয়ে এসে যাবার সময় ফুফু মালা ও পেয়ারাকে এবং আব্বা- মোস্তফা আলী, ভালো নাম- গোলাম মোস্তফাকে সাথে করে নিয়ে যেতে ভুলেননি। একটা সময় অবশ্য তাঁরা জগন্নথাপুর থেকে ফিরে এসেছিলেন, তখন আমার ফুফুরা বিয়ের উপযুক্ত; আব্বার বয়সও কম নয়। মাতৃহীন পরিবারে শেষ হয় সন্তানদের লড়াই-সংগ্রামের?
সেটা আর হয়নি। তিন বাপ-চাচা ছিলেন আব্বার- সোনা উল্লা, (তিনি বিয়ের পর নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান।) রহমত উল্লা এবং শরিয়ত উল্লা; তাঁদের পিতা বরকত উল্লা পর্যন্ত তাঁরা ভূ-স্বামীই ছিলেন। কিন্তু তাঁদের সৌখিনতার যে গল্প শুনেছি, এতে খলদুনের ইতিহাসদর্শন কেবল স্মরণ করত হয়; মার্কসবাদী তত্ত্বকথায় উদ্ভব, বিকাশ ও বিলয়ের মধ্যে তাঁরা তখন শেষটায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। বস্তুত বড় জমি- ক্ষেতগুলি আর নেই, যা আছে এর অনেকটা পাকিস্তানপন্থীদের দ্বারা একসময় হারিয়ে ফেলেছিলেন। তখন একেবারে শূন্য না হলেও এই সময়টাতে ছিলো তাঁদের গরীবি হাল, এরকম একটা সময়েও আব্বা ছিলেন প্রকৃত বিপ্লবীদের মতো সৎ। সম্ভবত এই একটা কারণে সমকালে তিনি অন্যদের বেশ সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন। এর মধ্যে আমার ফুফুেদর বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো, দুটিই- আমাদের গ্রামে। এখানে বলি সাংস্কৃতিকভাবে তাঁদের পিতা ও চাচা, আমার বড় দাদা ও ছোট দাদা’র কুড়া ও ঘোড়া কিন্তু তখনও রয়ে গিয়েছিলো এবং সেটা দেশ স্বাধীনের পরও। আগেই বলেছি এর মধ্যে আব্বার জায়গা ছিলো সীমিত, তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ হয়ইনি। এটা ছিলো তাঁর মাত্র ক’দিনের একটা স্মৃতি এবং এর পরিসীমা ছিলো অক্ষর জ্ঞান পর্যন্ত। তবুও বড় কথা হচ্ছে তাঁর মনটাকে তিনি শিক্ষিত করতে পেরেছিলেন। শৈশবে বেশ এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করেছেন, তখন বন্ধনমুক্তির এসব দিনে তাঁর বিদ্যাপীঠ বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো উন্মুক্ত ও বাস্তব এই পৃথিবী। মূলত তাঁর সময় তাঁকে অনেকটা শিখিয়ে নিয়েছিলো, এখানে তাঁর স্বাক্ষর জ্ঞানের প্রশ্ন বড় নয়। একসময় ভুলে গেলে সেটা আমাদের দেখিয়ে দিলে হতো, কিন্তু তাঁর প্রজ্ঞানে- কথার ঝিলিকে দেখেছি অন্যেরা কেমন প্রীত ও অভিভূত হতেন। সন্দেহ নেই এটা ছিলো বেশ সুখদায়ী এবং ছোট-বড় সবাই বেশ উপভোগ করতেন। তাই আমার ধারণা তাঁর শত্রুরাও স্বীকার করবেন যে, এই সংসর্গে সাধারণ এই মানুষটি ছিলেন একটু অসাধারণই। বলা বাহুল্য এই সংসর্গের জন্য, যখন তিনি বয়োবৃদ্ধ, অনেকে আসতেন আমাদের ওখানে। তাঁরা কী পেতেন জানি না, কিন্তু তাঁদের আলাপে বেশ দিন কেটে যেতে দেখেছি। আমরা সাত ভাইবোন কেউ’ই একটা সময় থেকে দিনে বাড়ি থাকি না, বোনেরা তাদের সংসারে; আর আমরা ভাইয়েরা থাকি আমাদের কর্মক্ষেত্রে। এখানে আব্বার পাশে থেকে তাঁর সাথে দু-দ- কথা বলার ফুসরত বলতে গেলে আমাদের ছিলো না। এটা এক ট্রাজেডিই!
এসব দিনগুলিতে আব্বার এই সংসর্গ বলি বা সূর্যাস্তের আড্ডা- তাঁকে জীবনের আস্বাদ থেকে বঞ্চিত করেনি ঠিক, কিন্তু সন্তান হিসেবে আমরা তাঁর এই নিঃসঙ্গতার দিনে তেমন সময় দিতে না পারায় এখন বেশ অপরাধীই মনে হয়। এখানে বক্কর নামে একজনের প্রতি আমরা খুবই কৃতজ্ঞ, সে-ই ক’বছর ধরে আব্বাকে সময় দিতো; সংখ্যাটা না বাড়লেও তখন তাঁদের এই আলাপে সকালটা একসময় বিকেল হতে অসুবিধে হতো না। আব্বার একটা জীবনবোধ তো ছিলোই, রসবোধও ছিলো প্রখর; এর মধ্যে তিনি তাঁর আটপৌরে এই ভাববাদী জীবন ও চরিত্রে একটা অভাবনীয় উচ্চতা রচনা করে নিয়েছিলেন। অবশ্য এখানে সবটা তিনি রেখে দিয়েছিলেন আল্লার হাতে, এদিকে সংসার সামলে নিচ্ছেন আমার মা; তখন যত দুঃখ-কষ্ট হোক, সাংস্কৃতিক একটা জীবন কাটাতে তাঁর অসুবিধা হয়নি। যৌবনে এই মানুষটি ছিলেন আবার ঘাটু গান ও যাত্রাপালায় সরব ও মশগুল, তিনি আমাদের এসব না বললেও লোকমুখে আমরা ঠিকই তাঁর সে কীর্তি এবং যুবরাজের অভিনয়ের কথা শুনেছি। একটা সময় অবশ্য এসব ছেড়ে দেন, আমার দাদার অনুমতি নিয়ে বিয়ের আগে গ্রহণ করেন পীরের বয়াত; সেটা শম্ভুগঞ্জের লালকুঠি দরবার শরীফে। উন্মুক্ত পৃথিবীর পর এটা ছিলো তাঁর দ্বিতীয় বিদ্যাপীঠ, মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই আধ্যাত্মিক স্কুলের অনুশাসন গভীর ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় পালন করে গেছেন। এর একটা উদাহরণ দেই, সেটা তাঁর এই অধম পুত্রের সাথে বেশ জড়িয়ে আছে বলে শেষ করবো এই বয়ান। দেশটা পাকিস্থান নেই, বাংলাদেশ নামে জন্ম হয়েছে নতুন রাষ্ট্রের; এর ‘দুই/আড়াই বছর পর’ আমার জন্ম। সেটা তখনকার বাংলা পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ হবে, ছেলে তো হলো, এবার তার নাম রাখতে হবে। কী করবেন আমার এই পিতা বা কোথায় যাবেন মনে হয়? কাউকে না বলে তিনি গেলেন তাঁর পীরের বাড়ি। তখনকার রাস্তাঘাট খারাপই ছিলো, এছাড়া ডুংরিয়া থেকে শম্ভুগঞ্জের দূরত্বও বেশ। আব্বার পীর না হেঁটে দৌড়ে আসা তাঁকে মনে হয় এর মধ্যে দেখে ফেলেছিলেন, তাই এগিয়ে এসে জানতে চেয়েছিলেন কী হয়েছে? কথা বলা ও দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি নেই, তবুও বলতে চাওয়ার মধ্যে পীর সাহেবের সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। তিনি খাবার ও বিশ্রাম নেবার পর বলা যাবে বললেও তাঁর তর সইছিলো না। তাঁর ছেলের যে একটা নাম চাই! সে নাম তিনি সেদিনই পেয়েছিলেন, পরদিন যখন বাড়ি ফিরে এলেন, লোকেরা বিশ্বাস করতে পারছিলো না। এটা এখানেই শেষ নয়, এবার তিনি আমাকে নিয়ে যাবেন তাঁর পীরকে দেখাতে; আমার যখন বয়স দশ হলো, গেলাম আমরা- পিতা ও পুত্র।
সেবার এই প্রথম আমি ট্রেন চড়ি, ব্রহ্মপুত্র দেখার সুযোগ পাই; দরবার শরীফের পাশে দেখি একটা জুট মিল এবং নদীর ওপাড়ে ময়মনসিং শহর। বলা বাহুল্য আব্বার জীবনে আল্লাহ ও রাসুল(সঃ) বাদে তাঁর পীরই ছিলেন সব। যদিও তাঁর এই গুরুসর্বস্বতা নিয়ে আমরা পিতা-পুত্রের মধ্যে একসময় কম কথা হয়নি, যুক্তির একটা ধার মনে হয় আমি তখন থেকে রপ্ত করে নিয়েছিলাম এবং এই কৃতিত্ব ছিলো একান্তই তাঁর। এখানে আমার সাং¯কৃতিক অনুপ্রবেশেও যদি কিছু গ্রাহ্যতা থাকে, ধরে নিতে হবে এটাও তাঁর সেই উত্তরাধিকারের ফল। মনে পড়ে শীতকালে তিনি আমাদের উঠানে আসর জমাতেন, আসতেন তাঁর পীর-ভাইয়েরা ও প্রতিবেশীরা; রাতভর হাততালি দিয়ে হতো গান। হালকা নৃত্য হতো, জিকিরও। দু-একটি গানের কলি আজও মনে রয়ে গেছে, ‘মুর্শিদ পরশ মনি গো, লোহাকে বানাইলা কাঁচা সোনা’; ‘আরব দেশি নাইয়া, শম্ভুগঞ্জে আসিয়া, আসাম-বাংলা পাগলও বানাইলো রে’। এখানে জালাল খাঁ তো আব্বার প্রিয় ছিলেনই, এর একটি দিয়ে আমাদের উপদেশও দিতেন- ‘বেশির কাছে কম না থাকলে, বেশির কি আর মূল্য রয়?’ আমরা তখন এসবের মানে বুঝতাম বা এখন বুঝি বলবো না, তবে এখন ভালোই বুঝতে পারি এরকমটা ছিলো তাঁর শিক্ষা পদ্ধতি। এখানে প্রবাদ-প্রবচন ছিলো, ছিলো গল্প ও স্মৃতিকথা এবং কখনও কোনও গান বা গানের কলি। আব্বা সমাজ পরিবর্তনের মানুষ ছিলেন বলবো না, লোকেরা যে তাঁকে পীরসাহেব বলে ডাকতো, এটা তাঁর গুরুবাদিতার জন্য। (গ্রামসি মনে হয় এরকম গুরুবাদী ও ধর্মীয় গুরুদের বলছেন, ‘গতানুগতিক বুদ্ধিজীবী’; না?) তবুও বলি সমাজের প্রতিটা উদ্যোগ বা ভালো কাজে ছিলো তাঁর আন্তরিক অংশগ্রহণ। এখানে এরকম কিছু কাজের কথা বললে ভালো হতো, সেটা অন্য কোনও সময় করা যাবে বলে আশা করি।
করোনাকাল’২০ বিশ্বের কী ক্ষতিই না করে গেলো! আমরা তখন আব্বাকে নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলাম, তিনি এর আগ থেকে হার্টের সমস্যায় ভোগছিলেন; তাই আমরা বাড়তি সতর্কই ছিলাম। তিনি আর মানতেন এসব? তবুও বলতে হবে এই সময়টা আমরা ভালোয়-ভালোয় কাটিয়েছি, ৩রা সেপ্টেম্বরে ভাইবোনেরা মিলে উদযাপন করেছি আব্বা-আম্মার ৫০তম বিয়েবার্ষিকী। আমরা তাঁদের ছবি তুলছিলাম, দেখেছি দুজনই কেমন সলজ্জ হয়ে উঠেছিলেন এবং একে-অন্যের দিকে তাকাতেই পারছিলেন না! এবার ২১ এর পর এলো ২০২২, জানুয়ারির ১৫ তে অসুস্থতা বেড়ে গেলে ডাক্তার দেখাই। অসুখটা যে বেশি বা মারা যাবার মতো মনে হয়নি, একটু ঘুরে আসা ও ডাক্তার দেখানো যাবে মনে করে আমরা তাঁকে ওসমানিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। এর দুদিন পর- ১লা ফেব্রুয়ারি, ভোরে তিনি আমাদের ছেড়ে চলেই গেলেন।
আমার পিতা মৃত্যহীন প্রাণের অধিকারী ছিলেন না, কে বা আর হয়! এছাড়া তিনি ছিলেন ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে তাও বলা যায় না। কিন্তু এখন বেশ বুঝতে পারছি তিনি যত সাধারণ হোন একজন বাঙালি হিসেবে অভাবনীয় একটা উচ্চতা তাঁর ছিলো এবং এখানে আমাদের আশ্রয় ছাড়াও ছিলেন কতটা সোনার মানুষ। ভাবি যদি তাঁর বেঁচে থাকতে এসব বুঝতে পারতাম, সেটা হতো আমাদের জন্য কত কাজের!
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, শাহজালাল মহাবিদ্যালয় জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ।
২৭/১/২৩
- প্রতিবাদ করায় শাল্লায় কৃষকের উপর মামলা
- তাহিরপুরে বিলবোর্ড কেটে ফেলার অভিযোগ