আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুষ্টি বাগান

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
বাঁশের কঞ্চির বেড়ার উপরে পলিথিন আর বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মাচাং তৈরী করা হয়েছে। ঘরের পাশে একটু জায়গা থেকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে উঠছে কুমড়া, শিম গাছের লতা-পাতাগুলো। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠেছে লাউ, শিশিংগাও। কিছু কিছু ঘরের চাল ছেয়ে গেছে শিম ও কুমড়ার লতায়। ফুলে ফলে বড়ে উঠেছে লতানু এই গাছগুলো। প্রতিটি বাড়িতে লাউ, বরবটি, কুমড়া, শিম, শিশিংগা সহ পেঁপে গাছেও এসেছে ফুল। এ যেন চোখ ধাঁধানো দৃশ্য।
এগুলো সব ভূমিহীন মানুষের গড়ে তোলা ফললের চিত্র। জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইউসুফনগর গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বাসিন্দাদের বাড়ীর আঙ্গিনা, ঘরের চাল নারীরা শাক সবব্জিতে ভরে তুলেছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলো এখন এক একটি পুষ্টি বাগানে রূপ নিয়েছে। মৌসুমী নানা সবজির চাষ করেছেন আশ্রয়ন প্রকল্পের নারীরা। ঘরের আশপাশের ফাঁকা জায়গাতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন তারা। স্বল্প পরিসরের বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এসব চাষ করে যেমন পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছেন, পাশাপাশি অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আয়ের উৎস তৈরী হয়েছে। পুরুষের চেয়ে নারীরা এই চাষে এগিয়ে রয়েছেন।
বাড়ির আংগিনায় পুষ্টি বাগান আর তার পাশের ফাকা জায়গাতে এসব জমি চাষ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। একই সঙ্গে বিনামূল্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি ঘরে ঘরে এসব সবজি বীজ দিয়ে সহায়তা করেছে সবুজ জীবিকায়ন প্রকল্প কারিতাস সিলেট অঞ্চল। সেই বীজ রোপন করে পরিচর্যা করেছে আশ্রয়ন প্রকল্পের নারীরা। বাড়ির পাশে এসব সবজি চাষ করে খুশী নারীরা।
আশ্রয়ন প্রকল্পের নারী সদস্য মাহমুদা বেগম, শায়েস্তারা বেগমা, সামিনা বেগম, কুলসুমা আক্তার, আনোয়ারা বেগমসহ অনেকেই বলেন, আমরা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষণা টিভিতে দেখে বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত জমিতে শাখ-সবজি চাষ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে জায়গাসহ ঘর দিয়েছেন। আমরা শাক-সবজি চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আলা উদ্দিন বলেন, আমাদের কৃষি অফিসের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ নিয়মিত আশ্রয়ন প্রকল্পসহ পতিত জমি আবাদ করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। বাড়ির পাশে সবজি চাষে তেমন খরচ ও পরিচর্যার দরকার হয় না। আমরা তাদেরকে পতিত জমিতে সবজি চাষে পরামর্শ দিয়ে থাকি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ বাস্তবায়নে উপজেলা সব পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।