বিশেষ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে কোন সময় বর্তমান কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হতে পারে। নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক পদে পাঁচ এবং সদস্য সচিব পদে দুই জনের নাম কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের আলোচনায় রয়েছে বলে দলীয় একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
২০১৭ সালের মে মাসের শেষ দিকে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি দলীয় চেয়ারপার্সনের নির্দেশে অনুমোদন দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নুরুলকে। এই কমিটি প্রায় ছয় বছর হয় দায়িত্ব পালন করছে।
সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষে সিলেট বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা ইউনিটে নতুন কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছে বিএনপি। ইতিমধ্যে সিলেট জেলা ও হবিগঞ্জে বিএনপির নতুন কমিটি করা হয়েছে। সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটি হবে আগামী চার মার্চ।
সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় সংগঠনের সম্মেলন করার আগে কেন্দ্রীয় নির্দেশে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল। আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক ছাড়া আর সকলেই সদস্য ছিলেন। এই কমিটি সকল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি করে দেয়। পরে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় কাউন্সিলারদের ভোটে কমিটি হয়। হবিগঞ্জে একজনকে আহ্বায়ক এবং আট জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল। তবে ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আহ্বায়ক ও প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক অনুমোদন দিয়েছিলেন। তারাও একই প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করেছেন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় কমিটি করেন। সিলেট মহানগরে আহ্বায়ক, দুই যুগ্মআহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দিয়ে করা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের স্বাক্ষরে ইউনিট কমিটি হয়। এই কমিটির উদ্যোগে আগামী চার মার্চ হবে মহানগর সম্মেলন। সরাসরি ভোটে হবে কমিটি।
একই ধারাবাহিকতায় সুনামগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে কিভাবে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হবে এই নির্দেশ এখনো দেননি কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল লতিফ জেপি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক নাদীর আহমদের নাম আহ্বায়ক হিসাবে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নুরুল এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি যুবদলের আহ্বায়ক আবুল মুনসুর শওকতের নাম সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনায় রয়েছে।
গেল ৩০ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সিলেট বিভাগে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন সুনামগঞ্জে দলের কর্মী সভায় জেলায় সংগঠনের সকল ইউনিটে সম্মেলন করার জন্য জেলা আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়ার কথা জানান।
সম্প্রতি জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন’এর সঙ্গে রাজধানীতে গিয়ে সাক্ষাৎ করলে, তিনি একই ধরণের মন্তব্য করে জানান শীঘ্রই সুনামগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি করা হবে।
এরপর থেকেই জেলা বিএনপির দায়িত্ব নিতে আগ্রহীরা কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতা এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।
দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আহ্বায়ক পদে তিন এবং সদস্য সচিব হিসেবে দুইজনের নাম প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে গ্রীণ সিগন্যাল পেলেই কমিটি ঘোষণা করা হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বললেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আছে। আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি হবে। পরে ইউনিটে ইউনিটে সম্মেলন করে সরাসরি ভোটে কমিটি হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন বললেন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটি আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরমেটে না কি, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দিয়ে হবে, এটি কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা সিদ্ধান্ত দেবেন। তিনি জানালেন, আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক যিনি থাকবেন, তিনি পরবর্তীতে যাতে সভাপতি পদে প্রার্থী থাকেন না, সেই চর্চা করা হচ্ছে। সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায় সেটি অনুসরণ করা হয়েছে।
- বাম্পার ফলন যখন গলার কাঁটা
- আলোর ফেরিওয়ালা/ ঘরে ঘরে বই বিলি করছে শিক্ষার্থীরা