ওয়ালী উল্লাহ সরকার, জামালগঞ্জ
জামালগঞ্জে কলা পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পাইকারদের কাছ থেকে কেনার পর খুচরা ব্যবসায়ীরা এই রাসায়নিক ব্যবহার করে বাজারে বিক্রি করছেন। এতে স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছেন খুচরা ক্রেতারা।
সাচনা বাজারের কলার আড়ৎদার বাবুল সরকার, দিলাল মিয়া ও কালু মিয়া জানান তারা সরাসরি কুষ্টিয়া থেকে ট্রাক দিয়ে কলা আনেন। প্রতি ট্রাকে ১২শ’ থেকে ১৩শ’ কলার ছড়ি থাকে। এক ছড়ি কলা ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা ধরে বিক্রি করেন। প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার কলা বিক্রি করেন তারা।
এসব কলা মেডিসিন দিয়ে পাকানো কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা কলায় মেডিসিন দেই না। মেডিসিন দিলে আমাদের কলা একদিনেই পেকে যাবে। তবে যারা কিনে নেয়, তারা মেডিসিন দিতে পারে।
এলাকাবাসির সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ট্রাক বোঝাই করে উপজেলার সাচনা বাজারে কলা নিয়ে আসেন পাইকাররা। এখান থেকেই মেডিসিন দিয়ে পাকানো হচ্ছে কলা। রাসায়নিক ইথোফেন কিনে তা এক বালতি পানির সাথে মিশিয়ে তাতে কলার ছড়িগুলো চুবিয়ে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখেন। শুধু সাচনা বাজারই নয়, উপজেলার সব বাজারেই আপরিপক্ষ কলা পাকতে ব্যবসায়ীরা এই রাসায়নিক ইতোফেন ব্যবহার করেন। এই রাসায়নিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিও অবগত নন অনেকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কলা পাকাতে ইথোফেন ব্যবহার হলেও এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু অধিক মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা এসব নিয়ম মানছেন না। দ্রুত ফল পাকাতে তারা ইথোফেন প্রয়োগ করে থাকেন। এতে কলার পুষ্টিগুণ লোপ পায়। এছাড়া এ্যসিডিটিসহ বিভিন্ন পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত রোগ এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কলা ব্যবসায়ী জানান, সাচনা বাজারে পাইকারদের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৫০ থেকে একশটি কলার ছড়ি কিনি। কলার ছড়ি কেনার পর পাইকারগণ আমাদের ১ লিটার বোতলে ৪-৫ ফোটা মেডিসিন দিয়ে দেন। এই মেডিসিন ঘরে এনে কলার জাক দেওয়ার আগে স্প্রে মেশিন দিয়ে কলার ছড়িতে স্প্রে করি। পরে ছালার বস্তা দিয়ে একদিন ডেকে রাখলে, কলা পেকে হলুদ রং ধারন করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মঈন উদ্দিন আলমগীর বলেন, ফল গাছ থেকে আনার তাতে ইথোফেন প্রয়োগের কোন সুযোগ নেই। এটি করা হলে এই কলাটিতে রাসায়নিক থেকে যায়। বিশেষ করে সরাসরি প্রয়োগের ফলে কলায় ইতোফেন থেকে এক ধরনের অ্যান্ডিসাইট উৎপন্ন হয়। কলার মাধ্যমে এ রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে তা মানুষের মস্তিস্কে অক্সিজেন পরিবহণে বিঘœ সৃষ্টি করে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ফল পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারের সুযোগ নেই। এরকম অভিযোগের সত্যতা পলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বয়স্ক ভাতার টাকা ইউপি সদস্যের পকেটে
- সড়ক কষ্ট ঘুচলো না জামালগঞ্জবাসীর