গ্রামবাসীর উদ্যোগে সড়ক

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
বছরের প্রায় আট মাসই কাদাপানি মাড়িয়ে স্থানীয় বাজার, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয় ঢুলপুষি গ্রামবাসীকে। বর্ষায় দূর থেকে দেখতে দীপের মতো ঢুলপুষি গ্রামের খানার সংখ্যা ৪৫ এর মধ্যে। জনসংখ্যা কম থাকায় এ গ্রামের প্রতি যেন নজর নেই কারও। দীর্ঘ বছর ধরে মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ওই গ্রামের জনগণকে একটি সড়কের অভাবে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। গ্রামবাসী দীর্ঘ বছর ধরে একটি সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা কারও কর্ণগোচর হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি ঢুলপুষি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীউল কিবরিয়া তালুকদার সড়ক নির্মাণের জন্য গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেন। আর গ্রামবাসী উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে দক্ষিণউড়া গ্রামের ছয় কিয়ার ক্ষিত্তে নামক স্থান হতে ঢুলপুষি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৯০০ মিটার সড়ক নির্মাণে মাটি ভরাটের কাজ শনিবার বিকেলে শেষ করেছেন।
গত ৬ মে ঢুলপষি গ্রামের রুবেল সরকারের বাড়িতে শামীউল কিবরিয়াসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। পরে শামিউল কিবরিয়া স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের পক্ষে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিলে পর্যায়ক্রমে গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় অর্থ দিয়ে একটি তহবিল গঠন করেন। এ তহবিলে দক্ষিণউড়া গ্রামের বিপ্লব বিশ্বাস, স্থানীয় ইউপি সদস্য আমানউল্লাহসহ ঢুলপুষি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আর্থিক সহযোগীতা করেন। আর সংগৃহিত অর্থ দিয়েই গত ১০ মে সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। বৃষ্টির কারণে কাজে বিঘœ ঘটনায় শনিবার সড়কে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে।
ঢুলপুষি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীউল কিবরিয়া তালুকদার বলেন, বংশীকুন্ডা বাজার থেকে ঢুলপুষির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। তবে প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গায় কোনো সড়ক না থাকায় ঢুলপুষি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সর্ব সাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সড়ক নির্মাণ কাজে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
দক্ষিণউড়া গ্রামের বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, নির্বাচনে ভোট চাওয়া ছাড়া কোনো জনপ্রতিনিকে ওই গ্রামে যেতে হয় না। ফলে সড়ক উন্নয়ন হয়নি। ঢুলপুষি গ্রামের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেলে কোনো মেহমান আসলে মোটরসাইলে দক্ষিণউড়া গ্রামে রেখে যেতে হয়। এ সড়ক নির্মাণের ফলে দীর্ঘ বছরের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধানের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।