আলী আহমদ, জগন্নাথপুর
জগন্নাথপুরে দীর্ঘদিনের বিভক্ত আওয়ামী লীগ এবার প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। সোমবার আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের নৌকার প্রচারণায় দুই ধারায় বিভক্ত সরকার দলের নেতাকর্মীদের একসঙ্গে প্রচারণায় দেখা গেছে।
স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের এক নেতা জানালেন, দীর্ঘদিন পর প্রথমবারের মতো দুই মেরুর নেতাকর্মীরা এক মোহনায় এসে মিলিত হয়ে গতকাল দিনভর জগন্নাথপুরের পাইলগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেছেন।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, প্রয়াত জাতীয় নেতা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ২০০৫ সালে মৃত্যুবরণ করলে তাঁর শূন্য আসনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সাবেক সচিব এম এ মান্নান ও আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডনের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। ২০০৮ সালে এই আসনে দলের মনোনয়ন পান বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য এম এ মান্নান। ঐ সময় আজিজুস সামাদ মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও নির্বাচনী মাঠে তাঁর একটি বলয় তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের পর থেকে স্থানীয় সকল নির্বাচনে দুই নেতার বলয়ের প্রার্র্থী দেখা যায়। গত ইউনিয়ন ও উপজেলা নির্বাচনে দুই বলয়ের প্রার্থী ছিল। এবারের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আজিজুস সামাদ ডন বলয়ের লোক হিসেবে পরিচিত হারুন রাশীদ। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে আজিজুস সামাদ তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। ঐ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী কমিটির সদস্য, আজিজুস সামাদ দলীয় প্রার্থী নুরুল ইসলাম কে নিয়ে জগন্নাথপুরের কালনির চর, কালানজুরা, ফেচি, কাতিয়া, সাতাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণায় চালান। এ সময় তাঁর সঙ্গে প্রচারে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের শিবিরের জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মশহুদ আহমদসহ দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরআগে বিভক্ত দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের এক সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণা দেখা যায়নি।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু জানান, নৌকার পক্ষে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। ভেদাভেদ ভুলে মাঠে কাজ করছে আওয়ামী লীগ।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন বলেন, জননেত্রীর শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এবং সরকারের ধারাবারিক উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে জয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ গত ২ নভেম্বর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পরিকল্পনা মন্ত্রীর অনুসারী আকমল হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এসময় দলের উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুস সামাদ অনুসারী মুক্তাদীর আহমেদ প্রার্থী হন। গত ২৬ ডিসেম্বর আকমল হোসেন মৃত্যুবরণ করলে নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
- এবারও সময়মতো ধান কেনা শুরু করা যায়নি
- সুনামগঞ্জ-২ আসন/ আবারও লড়তে চান জয়া সেন