বিশেষ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের প্রবেশ দুয়ারে সিলেট বিভাগের দীর্ঘ সেতুর কাজ শেষের পথে। কর্তৃপক্ষের দাবি সেতুর কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। জেলার জগন্নাথপুরের শেষ সীমানা রানীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিতব্য এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে সুনামগঞ্জের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে। দুই ঘণ্টা কম সময়ে পৌঁছা যাবে ঢাকায়।
সুনামগঞ্জ-পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩০ কিলোমিটারের মাথায় রানীগঞ্জ সেতু’র কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। রানীগঞ্জ বাজার ও পাইলগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে হচ্ছে কুশিয়ারা সেতু। নদীর উপর ৭০২.৩২ মিটার দীর্ঘ সেতুটি এমনভাবে তৈরি হচ্ছে যাতে বড় বড় লঞ্চ, বাল্কহেড, কার্গো এমনকি জাহাজ চলাচলেও কোন সমস্যা না হয়। সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের দৈর্ঘ্য হবে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কমবে ৫৫ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থারও অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরসহ জেলার পর্যটন এলাকায় পর্যটকের উপস্থিতি আরো বেড়ে যাবে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে হবিগঞ্জ জেলাবাসীর যোগসূত্র স্থাপন হবে। হাওরবাসী দীর্ঘদিন ধরে কুশিয়ারায় সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন। সেতুটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানালেন তারা।
রানীগঞ্জের বাসিন্দা অ্যাড. আজমল হোসেন বলেন, ‘এই সেতু কেবল রানীগঞ্জ বা জগন্নাথপুর নয়। পুরো সুনামগঞ্জ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র পাল্টে দেবে।’
বাজারের ব্যবসায়ী রজত রায় বললেন,‘সেতু’র চলমান কাজ দেখার জন্য আশপাশ এলাকা থেকে
লোকজন আসেন। এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের কাছে বড় এই উন্নয়ন কাজের জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। সেতু’র কাজের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্বপ্ন দেখার সাহসও বেড়ে যাচ্ছে।
গণমাধ্যম কর্মী অমিত দেব বললেন, সেতু হলে জেলাবাসী ঢাকায় গিয়ে কাজ শেষে দিনে দিনে বাড়ি ফেরা সম্ভব। এটি এক সময় কল্পনাও করা যেতো না। সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানালেন তিনি।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বললেন, সিলেট বিভাগের দীর্ঘ এই সেতু নেভিগেশনের সর্বোচ্চ সুবিধা রেখে করা হয়েছে, এমন ডিজাইনে সেতু বাংলাদেশে এটাই প্রথম।
গত ২৫ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শনের সময় পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ পদ্মা সেতু নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, ভাটির প্রায় এক কোটি মানুষ কুশিয়ারা সেতু নিয়েও স্বপ্ন দেখেন। পদ্মা সেতুর কাজ আগামী বিজয় দিবসের আগে শেষ হবে এবং আমরা আশা করছি বিজয় দিবসে এটি উদ্বোধন হবে। ঠিক একইভাবে এই সেতুর কাজ আগামী এক বছরে শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো পদ্মা ও কুশিয়ারা সেতু একই সময়ে উদ্বোধন করার জন্য।
- চালক শহীদকে বহিস্কার করেছে সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন
- এগারো বছরের মেয়ের চোখে মুক্তিযুদ্ধ