দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হওয়া উচিত

ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম ও ‘প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংগঠনটি গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই মন্তব্য করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক মান লঙ্ঘন করে এমন মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহসংক্রান্ত আইনগুলো রদ করা উচিত বলেও মন্তব্য করা হয়।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে এসব মামলা সুস্পষ্টভাবেই দেশটির সব গণমাধ্যমের প্রতি ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা। তিনি বলেন, মানহানিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা ঠিক নয়। কোনো পত্রিকা যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কোনো ব্যক্তির সুনাম হানি করে, তাহলে দেওয়ানি আইনে মামলা করে তার প্রতিকার পাওয়াই হলো সঠিক পথ। তবে সে ক্ষেত্রেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে এক-এগারোর সময় সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের বিচ্যুতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মাহ্ফুজ আনাম তাঁর পত্রিকায়ও এমন ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছিল বলে স্বীকার করেন। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে ‘ডেইলি স্টার’ সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলে বিচার চান। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে কয়েকজন সাংসদ ‘ডেইলি স্টার’ বন্ধ করা এবং মাহ্ফুজ আনামের পদত্যাগ ও বিচার দাবি করেন। এরপর থেকেই মাহ্ফুজ আনামের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া শুরু হয়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে সারা দেশে ৭৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে।
এইচআরডব্লিউর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করায় ‘প্রথম আলো’র সম্পাদকের বিরুদ্ধেও ৫৫টি মামলা হয়েছে। দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর সংঘবদ্ধ আক্রমণের অংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দৈনিক আমার দেশ’-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে ২০১৩ সাল থেকে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছে।