ধানের গাড়িকে ১২শ’ টাকা জরিমানা

সোহানুর রহমান সোহান
বোরো মৌসুমে ধানের কোন ধরণের ধানের গাড়ী আটকাতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা থাকলেও সুনামগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের কোন কোন সদস্য সেটি মানছেন না। শনিবার সন্ধ্যার আগে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে প্রবেশ করার অপরাধে ধানের একটি ট্রলি থেকে ১২শ’ টাকা জরিমানা আদায় করলেন একজন ট্রাফিক কর্মকর্তা।
ধানবাহি ট্রলিটি পলাশ ইউনিয়নের খরচার হাওর থেকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বড়পারার কৃষক কামরুজ্জামানের বাড়িতে ধান দিতে আসে। ধান দিয়ে ফেরার পথে নতুন কোর্ট পয়েন্ট সড়কে কর্তব্যরত ট্রাফিক সদস্য গাড়িটি আটক করেন। ধান ফেলে আসার কথা বললেও ছাড় দেয়নি তারা। পরে রাত ৯ টার দিকে ১২শ’ টাকা জরিমানা দিয়ে নিজের গাড়িটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান পলাশ ইউনিয়নের ট্রলি চালক মোহাম্মদ উল্লাহ।
চালক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, শহরে ট্রলি চলেনা এই নিয়ম আমরা জানি। তাই আমি আসতে চাইনি। কিন্তু কোনো সমস্যা হবে না বলে কৃষক আমাকে জোর করে ১ হাজার টাকা ভাড়ায় নিয়ে আসছেন। ধান নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ কিছু বলেনি। ফিরে আসার সময় আটক করে। ধান পরিবহনের কথা জানালেও ছাড়েনি। ১ হাজার টাকা পাওয়ার আশায় ১২শ’ টাকা জরিমানা গুনতে হলো।
বড়পাড়ার কৃষক কামরুজ্জামানের ছেলে মাহমুদুল হাসান মিলন বলেন, খরচার হাওরে আমাদের ৩৫ কেয়ার জমি আছে। এই জমির ধান দিয়ে আমাদের সারা বছরের খাবার চলে। তাই ধান বাড়িতে আনার জন্য ট্রলিটি ব্যবহার করেছি। জন্মের পর থেকে ধান আনা নেয়া করি। এর আগে কোনোদিন এভাবে ধানের গাড়ি কেউ আটক করেনি। সেই আশায় নিয়ে এসেছিলাম শহরে।
ট্রাফিক পরিদর্শক মোহাম্মদ হানিফ বললেন, মহাসড়কে ট্রলি চলা অবৈধ, তাই আটক করা হয়েছে। ধানের গাড়ি আটক করা যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি।
এদিকে জেলা জুড়ে এখন চলছে সরকারিভাবে বোরো ধান সংগ্রহের মৌসুম। গ্রামগঞ্জের হাওরের কৃষকেরা ধান বিক্রয়ের জন্য সুনামগঞ্জ পৌর শহরে আসতে হবে। সহজলভ্য হওয়ায় হাওরে ধান পরিবহনে স্থানীয়ভাবে তৈরি ট্রলির ব্যবহার বেশি। ট্রলি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন হাওরে কিংবা গ্রামের সড়কে চলাচল করতে পারে না। তাই ট্রলির মাধ্যমেই হাওর থেকে একবারেই নিজ গোলায় ধান তুলেন কৃষক। যারা সরকারের কাছে বিক্রয় করবেন তারা খাদ্য গুদামে নিয়ে আসবেন। এখন যদি হাওর থেকে ধান এনে আবার মহাসড়কে গাড়ি বদল করতে হয় তাহলে কৃষকের পরিবহন খরচ দ্বিগুণ হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গেল ৭ মে ধান ক্রয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী ধান পরিবহনে সড়কে যেন কোন বিঘœ না ঘটে এবং ট্রলি যেন আটক করা না হয় এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারকে সহযোগিতার জন্য নির্দেশ দেন।