জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
জামালগঞ্জ উপজেলায় প্রতিটি বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত ও সারা বছরের সবজি চাহিদা মেটাতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান করছেন কৃষাক ও কৃষাণীরা। ভালো ফলন পাওয়ায় উপজেলা জুড়ে দিনদিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে পুষ্টি বাগানের।
জানা যায়, অনাবাদি ও পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে কাজ করছে কৃষি অধিদপ্তর। উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনা ও পতিত জমিতে পুষ্টি বাগান করতে সহযোগিতাও করা হচ্ছে। পুষ্টি বাগান স্থাপনে কৃষাক—কৃষাণীদের বছরে তিন ফসল চাষাবাদের জন্য সবজি বীজ, রাসায়নিক সার, বেড়া দেওয়ার নেট জাল, পানি দেওয়ার স্প্রে মেশিন, ফলের চারা সহ বিভিন্ন উপকরণ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে খালি জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল গাছ দেখা যাচ্ছে। নিজেদের সংসারের কাজের অবসরে কৃষক ও কৃষাণীরা বাগানে সবজি এবং ফল চাষাবাদ করে নিজেদের পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের জৈব ও কেচু সার তৈরি করে বাগানে প্রয়োগের মাধ্যমে ১২ মাস বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন তারা।
উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের জাল্লাবাজ গ্রামের আশিক নূর, লুৎফুর রহমান, মির্জাপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম, জয়ফুন নেছা, হাবিবা বেগম, ছালেহ আহমদ, ছিদ্দিকা বেগম, হেপী আক্তার, বিছনা গ্রামের সুহেনা বেগম, তারা জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় কেউ দুই শতক, কেউ ৫ শতক পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করেছেন। এই কার্যক্রমে সবজি বীজ, প্রশিক্ষন, বিভিন্ন ধরণের উপকরণ কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাগান তৈরিতে মাঠ পর্যায়ে উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সহযোগিতা, পরামর্শ ও তদারকি করছেন। এখন বাগানে তারা মিষ্টি লাউ, কুমড়া, চিছিংগা, ঝিঙ্গা, করলাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক— সবজি উৎপাদন করছেন। এসব তাদের পরিবারের চাহিদা মিটাচ্ছে। বাজার থেকে এখন আর কোন ধরনের শাক—সবজি কিনতে হচ্ছে না। এতে অনেক টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আয় করছেন।
উপজেলা কৃষিক কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন বলেন, জামালগঞ্জ উপজেলার ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ১৮৫টি পুষ্টি বাগান স্থাপনে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের বাগান করতে সচেতনতা সহ কৃষি বিভাগ থেকে বছরে তিন মৌসুমের সব ধরণের সবজি বীজ, রাসায়নিক সার, বাগানের বেড়ার নেট জাল, পানি দেওয়ার ঝাজড়ি, বারমাসি আম, বাতাবি লেবু, পেঁপে চারাসহ নানা উপকরণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এসব সহযোগিতার কারণে পারিবারিক পুষ্টি বাগানে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষাক ও কৃষাণীরা। তারা তাদের বাড়ীর আঙ্গিনায় পতিত জমিতে সবজি ও ফল চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
- শিক্ষকের উপর দুবৃর্ত্তদের হামলা
- বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম