শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে আবারও ঘটেছে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁওয়ের বড়বাড়ি গ্রামের মৃত ফয়জুর রহমানের বসতঘরে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এসময় সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় অনেক কাগজপত্রাদি নিয়ে যায় চোরেরা। চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের অর্থমূল্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মৃত ফয়জুর রহমানের স্ত্রী আমিনা বেগম তমা। খবর পেয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী। এসময় পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, ব্রাহ্মণগাঁও বড়বাড়ি গ্রামের মৃত ফয়জুর রহমানের স্ত্রী আমিনা বেগম তমার বোন অসুস্থ থাকায় তিনি তার সাথে সিলেটে অবস্থান করছিলেন। বাড়িতে কোনো লোকজন না থাকায় রাতের আঁধারে ঘরের মূল দরজার (লোহার গ্রিল) তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে চোরেরা। প্রতি কক্ষে আলাদা আলাদা তালা ভেঙে তিনটি ঘর তছনছ করে চোরেরা। এসময় শয়নকক্ষের আলমিরার সিন্দুক ড্রয়ার ভেঙে সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় অনেক কাগজ পত্রাদি নিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা চোর চক্র। এ ঘটনায় রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী আমিনা বেগম তমা।
তিনি কাতর কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে জানান, সিলেট থেকে এসে আমি আমার বাবার বাড়িতে উঠেছিলাম। কিন্তু রাতেই চোরেরা আমার সব নিয়ে গেলো।
তিনি বলেন, তার স্বামী ফয়জুর রহমান ২০১৮ সালে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আমাদের ছোট ছোট দুইজন পুত্র সন্তানও আছে। দুঃখ-কষ্টে জীবন কাটাচ্ছি। সহায় সম্বল বলতে এই স্বর্ণালঙ্কার ও চুরি যাওয়া নগদ টাকাগুলোই ছিলো। দালান ঘরের লোহার গ্রিল ও তালা ভেঙে আমার সব কিছু নিয়ে গেলো চোরেরা। আমার মনে হচ্ছে কোনো একটি চক্র উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমার এই ক্ষতি করেছে। যা নিয়েছে তার মূল্য ১০ লাখ টাকার মতো হবে। সব হারিয়ে আমি নিঃস্ব। এখন এই এতিম দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে জীবন কাটাবো? আমি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ভুক্তভোগীর ভাসুর আমিনূর রহমান বলেন, সকাল ঘুম থেকে উঠে গাছ থেকে আম পড়েছে কি না তা দেখতে ঘরের পেচনের দরজা খোলতেই দেখি তমার ঘরের রান্না ঘরের দরজা খোলা। বিষয়টি ভালোভাবে দেখতে তমার জা শাহিমা আক্তার বলি। সে ঘরের সামনে গিয়ে গ্রিলে টান দিলে দেখতে পায় গ্রিল খোলা। তখনই পাড়াপ্রতিবেশীকে ঢেকে আনি। শাহিমা আক্তারও একই কথা বলেন। পরে বড়বাড়ি গ্রামের মুরব্বি মো. মুজিবুর রহমান বলেন, আমার বাড়িতেই ঘটনা। এটা নজিরবিহীন। আমরা বিভিন্নভাবে খবর পাচ্ছি এলাকায় চোরের উৎপাত বেড়েছে। আজ আমার বাড়িতেই ঘটনা। আমরা চাই, পুলিশ প্রশাসন আরও কঠোরভাবে যেনো এই চক্রকে দমন করেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, চুরি হওয়ার খবর পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এসব বিষয়ে আমরা অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেকের সাথে কথা বলছি, আমাদের টিম কাজ করছে। আমি নিজেও থাকবো এই এলাকায়। আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আশা করছি। অচিরেই চোরচক্র ধরা পড়বে ইনশাল্লাহ।
উল্লেখ্য, গত দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন, চন্দপুর কোনারবাড়ি, নিদনপুর ও ব্রাহ্মণগাঁওয়ের বড়বাড়িতে প্রায় ১০/১১টি চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
- ছাতকে চোরাকারবারীদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি
- বঞ্চিত মানুষের পাশে আছেন প্রধানমন্ত্রী -এমপি মানিক