বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার
করোনা বিস্তার রোধে গত শুক্রবার মন্ত্রীপরিষদ পরিষদ জারীকৃত এক নির্দেশনায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ পর পরিস্থিতি দেখে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী অভিভাবক। অন্য সব কিছু খোলা রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়টি মানতে পারছেন না তারা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সুনামগঞ্জের ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, মাছ বাজার, সবজি বাজার, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, গণপরিবহন সহ কোন কিছুতেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সব কিছুই খোলা রয়েছে। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করে দেয়া হলো? তাহলে কি ধরে নেয়া হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই কেবল করোনা ছড়ায়?
শিক্ষার্থীরা জানান, সরকার প্রথমে বললেন, করোনার টিকা নিয়ে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করা যাবে। সেই আলোকে আমরা সকল শিক্ষার্থীরা করোনার টিকা নিলাম। কিন্তু করোনার ঢেউ বাড়তেই আবারও শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলো। এটা সত্যি খুবই দুঃখজনক এবং হতাশার।
রবিবার সরজমিনে দেখা যায়, কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বলাই নেই। ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, মাছ বাজার, সবজি বাজার, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, ফল বাজারে কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসনকেও উদ্যোগ নিতে দেখা যায় নি।
সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী পাবেলী আক্তার বলেন, সামনে এইচএসসি পরীক্ষা দেবো। কিন্তু হঠাৎ করে কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। আগে জানানো হয়েছিলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করা যাবে, সেজন্য সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা নিলাম, অথচ টিকা নিয়েও এখন আমরা ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছি না। আমি বুঝি না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে কিভাবে করোনা ছড়ায়।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আল হাবিব বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সরকার কি বুঝাতে চায় জানি না। করোনার জন্য সবার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কি খুব জরুরী। আমরা তো স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করি।
সুনামগঞ্জ সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিশা আক্তার বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলে খেলা হচ্ছে। দেশের সকল শিক্ষার্থীরা মাস্ক পড়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করে। এত কিছু মানার পরও সর্বপ্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দেয়া হলো।
সুনামগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিউলী আক্তার বলেন, সামনে এসএসসি পরীক্ষা। অথচ এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে একটাই দাবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমাদের পাঠ দানের সুযোগ দেওয়া হোক।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শাহিন আরাফাত বললেন, ইউপি নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন তো বন্ধ করা হচ্ছে না। প্রতিদিনই প্রার্থী ও সমর্থকেরা প্রচার প্রচারণা করছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্য মেলাও হচ্ছে। সেখানে কি করোনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে না? অথচ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেন। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা আসেন। এতে আমাদের শিক্ষাজীবনে বিরূপ প্রভাব পড়বে।