বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বিশেষ বরাদ্দ দাবি

চলতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি করেছে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট নগরীর ইমজা মিলনায়তনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সহ হাওরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতির ভিত্তিতে চাহিদা নিরুপণ বিষয়ক সভায় এ দাবি জানানো হয়।
এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্ভোগ লাঘবে স্বল্পমেয়াদে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরানোর জন্য শিক্ষা উপকরণ এবং পোশাক প্রদান, ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে বিনা সুদে ঋণ প্রদান এবং আগে নেওয়া ঋণের কিস্তি স্থগিত করা, কৃষকদের বিনামূল্যে সার বীজ ও কীটনাশক প্রদান, ২০১৭ সালের মতো এবারো বছরব্যাপী পরিবার প্রতি ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা প্রদান, বিনামূল্যে গো-খাদ্যের যোগান নিশ্চত করা, বন্যা ও ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজার ঘরবাড়ি সরকারি খরচে মেরামত করা এবং হাওর ও নদীর তীরবর্তী যে ৭০ হাজার বাড়ির ভিটার মাটি ক্ষতি হয়েছে সেসব বাড়ির মাটি ভরাটের জন্য সরকারি তহবিল হতে পরিবার প্রতি দশ হাজার টাকা প্রদান করার দাবি জানানো হয়।
দীর্ঘকালীন সমাধানের জন্য বক্তারা সিলেট ও সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে ভৈরব পর্যন্ত ব্যাপক ভিত্তিতে কার্যকর নদী খনন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা, হাওরের গ্রামগুলোকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রাম সুরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ করা এবং কৃষকদের জন্য শস্য বীমা চালু করার দাবি জানানো হয়।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে সংগঠনের সভাপতি কাসমির রেজা তার লিখিত মূল পবন্ধে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এ সময় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মদন মোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক। অনলাইনে সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পিযুষ পুরকায়স্থ টিটু’র সঞ্চালনায় উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তাহিরপুরের দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইউনুস আলী, তাহিরপুর সমিতি-সিলেট এর সভাপতি তারা মিয়া ও আধ্যাপক জ্যোতিষ মজুমদার। এসময় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ফিলেন।
গওহর নঈম ওয়ারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা ঠিক নয়। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। বন্যায় অনেকের পরিচয়পত্র ভেসে গেছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।
ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের পরিবেশ সচেতন হতে হবে। তিনি দুর্গত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ড. জহিরুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন না ঠেকাতে পারলে এ ধরনের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে আমাদের আরও পড়তে হবে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। এটি আন্তর্জাতিক ভাবে আলোচিত হতে হবে। দেনদরবার করে আমাদের অধিকার আমাদের আদায় করতে হবে।