বাঁধের নিচে সুরঙ্গ করে বিল সেচা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার
শান্তিগঞ্জের পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে কাউয়াজুরী হাওরের ৮৪ নম্বর পিআইসির ফসল রক্ষা বাঁধের নিচে সুরঙ্গ করে বোগলা ডুবি বিলের পানি অপসারন করছেন বিলের ইজারাদার। বাঁধের ক্লোজারের অংশে পানি নিষ্কাশনের এই সুরঙ্গ করা হয়েছে। পিআইসির সভাপতি বলছেন, প্রশাসন থেকে অনুমতি এনেছেন বলে বাঁধের নিচে সুরঙ্গ করেছেন ইজারাদার আজিজুল হক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাউয়াজুরী হাওরে বাঁধের পাশে কিছু পতিত জমি রয়েছে। সেই পতিত জমির অংশে তিনশ মিটার বড় খাল করে বাঁধের ভাঙন অংশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ভাঙন অংশে দেওয়া বাঁধের নতুন মাটির নিচ নিয়ে বড় প্লাস্টিকের পাইপ ঢুকানো হয়েছে। যাতে পানি হাওরের দিক থেকে বাঁধের উল্টোপাশের নদীতে গিয়ে পড়ে।
বাঁধের নিচে এরকম পানি নিষ্কাশনের সুরঙ্গ করার কারণে কৃষকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। গত বছর পাহাড়ি ঢলে অনেক বাঁধেই সুরঙ্গ তৈরি হয়ে পরে ভেঙে গেছে। এজন্য বাঁধে কোনো সুরঙ্গ বা ফাঁফা অংশ যাতে না থাকে, সেজন্য ড্রেজার দিয়ে কম্পেকসন করা হয়।
কাউয়াজুরী হাওরের ৮৪ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র (পিআইসি) সভাপতি মো. তখলুছ খান বললেন, বিলের ইজারাদার বাঁধের নিচ দিয়ে সুরঙ্গ করেছে। সে বলেছে, প্রশাসনের কাছ থেকে সুরঙ্গ করার অনুমতি এনেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাঁধের নিচে দিয়ে সুরঙ্গ করার সময়ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে (এসও) জানানো হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মাহবুব আলম বলেন, বিষয়টি আগে কেউ জানায় নি। এভাবে পাইপ দেবার কোন বিধান নেই। বিগত সময়ে দেখা গেছে, এভাবে পাইপ যে বাঁধেই দেওয়া হয়েছে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা ইজরাদারকে বলেছি, পাইপ তুলে নিতে, সে দুই দিন সময় নিয়েছে। এরমধ্যে পাইপ সরানো না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিলগুলো তিন বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়। ইজারার নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম দুই বছর বিলে মাছ ধরা যাবে না। তৃতীয় বছর ইজারাদার বিলে মাছ ধরবেন। তবে কোনোভাবেই বিলে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচা যাবে না। জাল ফেলে মাছ ধরতে হবে। তবে কৃষকদের সেচের সুবিধার জন্য তারা পানি নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে বিলে তিন মিটারের বেশি যেনো পানি থাকে।
বোগলা ডুবি বিলের ইজারাদার আজিজুল হক বললেন, বাঁধের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য নিচে লম্বা করে পাইপ ঢুকিয়ে দিচ্ছি। যাতে ঝুঁকি না থাকে। যেহেতু বিলটি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শুকিয়ে খনন করা লাগবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার) সখিনা আক্তার বললেন, বিল শুকানো বা বাঁধের নিচ দিয়ে সুরঙ্গ করার অনুমতি কাউকে দেয়া হয় নি। সরজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।