বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালনে সফল বশির

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
পাখীর মতো স্বাধীনভাবে চলতে চেয়েছিলাম। স্কুল জীবন থেকেই পাখির প্রতি ভালবাসা। সব সময় স্বপ্ন দেখতাম পাখির একটি ছোট খামার করার। সে লক্ষ্যেই প্রথমে হাঁস-মোরগের খামার এরং পরবর্তীতে বাড়ির বারান্দা ও ছাদের কোনে ছোট একটি বিদেশী পাখির খামার গড়ে তুলেছি। এই পাখির চাহিদাও রয়েছে।
কথাগুলো বলেছিলেন জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামালাবাজ গ্রামের মো. ইউনুস আলীর ছেলে রেজাউল বশির।
জানা যায়, জামালগঞ্জ সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে রেজাউল বশির। তারা ৩ ভাই ৩ বোন। বশিরের উদ্যোগে প্রথমে পরিবার পাশে না থাকলেও এখন সবাই তাকে উৎসাহিত করছে। বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন করে মাত্র ১ বছরে উপজেলায় সাড়া ফেলেছে সে। তার বাড়ির বারান্দা ও ছাদে পাখির মেলা দেখতে ভিড় করছে লোকজন। প্রতিদিনই পাখি কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। রাজধানী ঢাকা থেকে অনলাইনে পাখি নিতে আসেন ব্যবসায়ীরা।
রেজাউল বশির বলেন, স্কুলে পড়ার সময়ই বায়না ধরতাম কবুতর কিনে দেয়ার জন্য। অনেক গালাগাল শুনতে হয়েছে পরিবারের। ২০০৭ সালে মায়ের কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে একজোড়া কবুতর কিনি। সেই থেকে শুরু হাঁস-মোরগের খামার ও দেশী-বিদেশী পাখির খামার করার। এখন প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে খামারে।
রবিবার সরজমিনে বশিরের খামারে ঘুরে দেখা যায়, তার বাড়ির বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে গ্রীলের সঙ্গে খাঁচা বাধা রয়েছে। আবার কোথাও ডিম পাড়ার জন্য মাটির কলস গ্রীলে আটকানো রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশী কয়েক রকমের পাখি। পাখির কিচির মিচিরে শব্দে রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়া মানুষের মন কেড়ে নেয়। ছাদে দেখা যায় ২টি ঘর একটি কবুতরের অন্যটিতে বিদেশী পাখি রয়েছে। তার খামারে রয়েছে কিংক্স, লাভ বার্ড, ঘুঘুসহ বিভিন্ন পাখি। এসময় ২০ জোড়া লাভবার্ড পাখি বিক্রি করা হয়।
ঢাকা থেকে পাখি কিনতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, বশির আমার সাথে ফ্রেন্ড লিস্টে আছে। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে পাখি কিনে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করি। বশির ভাইয়ের নিকট থেকে ২০ জোড়া লাভভার্ড পাখি কিনতে ঢাকা থেকে আসছি। প্রতিজোড়া ছয় হাজার টাকা করে কিনেছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম বলেন, বিদেশী পাখি পালন করে প্রচুর টাকা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেজাউল বশির বিদেশী পাখি পালন করে সফল হয়েছে। আমরা উদ্যোক্তাদের পাখি পালনে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছি।