বাম্পার ফলন যখন গলার কাঁটা

১ মাস আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকায়
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
জামালগঞ্জ উপজেলায় এবার টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে অধিক ফলন এখন উপজেলার কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার পাইকারী বাজার মন্নান ঘাট বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও উপজেলার হারুন মার্কেটে, গজারিয়া বাজার, নোয়াগাঁও বাজারেও টমেটো একই দামে বিক্রি হচ্ছে। ১ মাস আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকায়। নিত্যপণ্যের উর্দ্ধগতির বাজারে টমেটোর পড়ে যাওয়ায় উপজেলার টমেটো চাষিদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, ক্ষেত থেকে টমেটো তোলার শ্রমিক খরচই উঠাতে পারছেন না কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো। তবে কৃষি বিভাগ বলছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী উৎপাদন হওয়ায় এবং বাজারে সরবরাহ বেশী থাকায় দাম কমেছে টমেটোর।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর ২২০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। তবে টমেটোর চাষ করা হয়েছে এবছর ২৩০ হেক্টর জমিতে। এতে প্রায় দুই হাজার আটশত মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন হবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, মৌসুমের প্রথমদিকে আগাম জাতের টমেটো চাষ করে ভালো মূল্য পেয়েছেন কৃষকরা। কৃষকরাও বলছেন, তারা ১ মাস আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে টমেটো পাইকারী বাজারে বিক্রি হয়েছে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা দরে। এতে কৃষকরা ক্ষেত থেকে টমেটো তোলার খরচই চালাতে পারছেন না। ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো।
মন্নান ঘাট বাজারের ব্যবসায়ী ও কৃষক ইয়ার আলী বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত টমেটো চাষ ও ব্যবসার সাথে জড়িত আমি। এ বছর আমাদের উপজেলায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছর এই সময় টমেটোর দাম কমে যায়, কিন্তু এত কম কোন সময় হয় না। মাত্র ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হলে কৃষকরা কি করে বাঁচবে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে হলে সরকারিভাবে টমেটো সংরক্ষণের জন্য হিমাগার অথবা বিভিন্ন সস তৈরীর কোম্পানীর সাথে কৃষি অফিসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিক্রির ব্যবস্থা করলে কৃষকরা বাঁচবে।
জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন জানান, এ বছর এই উপজেলায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকশত টন বেশী উৎপাদন হয়েছে। টমেটোর চাষী দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে চাহিদার চেয়ে বাজারে সরবরাহ বেশী হচ্ছে। এতে হঠাৎ করে টমেটোর দাম কমে গেছে। এতে কৃষক কিছুটা বিপাকে পড়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে টমেটোর সহ শীতকালীন সবজি সংরক্ষণের জন্য এই উপজেলায় একটি হিমাগার তৈরীর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছি।