বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার- জেলা প্রশাসক

স্টাফ রিপোর্টার
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজী রেখে দেশ স্বাধীন করেছেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আমরা বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারছি। আমরা জনগণের সেবা করতে পারছি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন দেশ ও জাতীয় পতাকা পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্য সন্তান।
রবিবার বেলা ১১টায় শহিদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। এসময় তিনি আরও বলেন, সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা দিচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও নাতি নাতনিদের কোটা পদ্ধতিতে চাকুরী দিচ্ছে। এছাড়াও বর্তমান সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস তৈরি করে দেয়া সহ তাদের কল্যাণে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহ্সান শাহ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রজত কান্তি সোম, সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলী আমজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার দীপঙ্কর বর্মণ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যগণকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। শেষে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
এর আগে প্রত্যুষে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় ৩১ বার তোপধ্বনি এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সকালে ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান্ শাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখ্ত পলিন, সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান প্রমুখ। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সকাল ৮টায় সুনামগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দিবস উপলক্ষে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কামনা করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। দিনব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং উপজেলা পর্যায়ে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ২৬ মার্চ ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ স্মৃতি নিয়ে আসে ২৫ মার্চের কালোরাত, ১৯৭১ সালের এই রাত থেকে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী অগ্নিপরীক্ষার সূচনা হয়েছিল। সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ (২৫ মার্চের পরের রাতে) ধানমন্ডিতে ৩২ নন্বরে তাঁর বাসভবন থেকে তৎকালীন ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) ওয়ারলেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি অর্জন করে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম লাভ করে।