বিশেষ প্রতিনিধি
নি¤œচাপের কারণে হাওরাঞ্চলের জেলার সবজি চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। তৃতীয় দফায় বপন ও রোপণ করা সবজির চারা বাঁচানো নিয়েও শঙ্কিত তারা। পানি জমে সবজির চারা নষ্ট হতে চলেছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, সোমবার সকাল থেকে হওয়া বৃষ্টি মঙ্ঘলবার এভাবে লাগাতার হলে- আগাম লাগানো সবজির মধ্যে মুলা, লালশাক, ডেঙ্গা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জমির মাটি কাদা হয়ে যাবে, গুড়ার মধ্যে মাটি আটকে পচন শুরু হবে। তাতে আবারও এই জমি চাষাবাদ করে সবজির চারা রোপণ বা বীজ বীজ বপন করতে হবে। তাতে আগাম সবজি বিক্রির কোন সুযোগ থাকবে না কৃষকদের।
সদর উপজেলার মীরের চর এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বললেন, এর আগে দুইবার মুলা, লালশাক, ডেঙ্গা, টমেটো ও ফুল কপি লাগিয়েছিলাম। বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়েছে। চারদিন আগে আবার লাগালাম। যেভাবে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। এ যাত্রায়ও বাঁচবে না কিছুই। বৃষ্টির পানিতে ক্ষেতের মাটি কাদা হয়ে গেছে। চারার গুড়ায় কাদা লেগে সকল চারাই নষ্ট হয়ে যাবে।
এই কৃষক জানালেন, মিরের চর এলাকার তাদের ৩০ জনের কৃষক দলের সকলেরই ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে সুরুজ মিয়া, মতলিব মিয়া, আউয়াল মিয়া ও সাইফুল ইসলামের। এরা আট শতক থেকে কেউ কেউ ৬০-৭০ শতক জমিতে শীতকালীন আগাম সবজির চাষাবাদ করেছেন।
কৃষকরা জানালেন, বৃষ্টি ছাড়লে এখন আবার জমি চাষাবাদ করতে হবে। পরে মাটি শুকাবে। এরপর চারা রোপণ করতে হবে। সব মিলিয়ে ১৫ দিন পিছিয়ে যাবে চাষাবাদ। তাতে খরচ বেড়ে যাবে। আগাম সবজি হবে না। সবজির যখন মূল্য ভালো পাওয়া যায়, তখন ফলন হবে না। আর্থিকভাবে লোকসানে পড়বেন তারা।
কৃষকরা জানালেন, এই সময়ে এভাবে বৃষ্টি হবে, এটি তাদের চিন্তায় ছিল না। এজন্য ক্ষতি হবে বেশি। অবশ্য এই সময়ের বৃষ্টিতে আমণ ধানের উপকার হবে জানিয়েছেন, কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান আহমদ জানালেন, সোমবার সকাল থেকে হওয়া লাগাতার বৃষ্টিতে আগাম চাষাবাদ করা সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবারও এভাবে বৃষ্টি হলে সবজি চাষীদের সর্বনাশ হবে। জমির মাটি কাদা হয়ে মাটির ‘জু’ (উপযুক্ততা) নষ্ট হবে। লাল শাক, মূলা, ফুলকপি, বাঁধা কপি’র চারা নষ্ট হয়ে যাবে। সিম, লাউ ও শসাতে ছত্রাকের আক্রমণ হবে। বৃষ্টি দুই তিনদিন থাকলে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত শীতকালীন আগাম সবজি বাজারে পাওয়াই যাবে না। তবে আমন ধানের জন্য এই বৃষ্টি উপাকারী জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বললেন, ধানে তোড় এসেছে। বৃষ্টির ফলে পরাগায়ন বেশি হবে। ফলন ভালো হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বললেন, জেলায় শীতকালীন সবজি হবে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। সোমবার পর্যন্ত এক হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেতে চাষাবাদ হয়েছে। একদিনের বৃষ্টিতে সবজির খুব বেশি ক্ষতি হবে না দাবি করে এই কর্মকর্তা জানালেন, মঙ্গলবারের পর বুঝা যাবে কেমন ক্ষতি হলো।
- রশি আছে, পোস্টার নেই/ ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে চলছে প্রচারণা
- ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত