ভূমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা/ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি (দল থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত) আসাদুজ্জামান রোকন ও তার সহযোগীরা চামরদানি ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে খাস জমিতে ৩০ বছর ধরে বসবাসকারী অন্তত ১০০ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মধ্যনগর বাজারে রসুলপুরের বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আসাদুজ্জামান রোকন এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে মধ্যনগর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যনগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আ. আউয়াল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা রুখসানা বেগম, ময়না আক্তার, আওলাদ হোসেন। মানববন্ধন শেষে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জমা দেন রসুলপুর গ্রামবাসী।
প্রায় ৩০ বছর আগে চামরদানি ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ৯০ নং দাগের ১৮ একর ভূমি একই ইউনিয়নের টেপিরকোনা ও ও বলরামপুর গ্রামের কয়েকজন বন্দোবস্ত নেয়। কিন্তু স্থানীয় কিছু ভূমিহীন মানুষের থাকার জায়গা না থাকায় ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খসরুজ্জামান বাবলু (রোকনের বড় ভাই) ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে বন্দোবস্ত পাওয়া ব্যক্তিদের সাথে সমন্বয় করে ভূমিহীনদের ১১ হাত করে আর বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ২০ হাত করে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তখন বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের দখল বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। সম্প্রতি রসুলপুর গ্রামের সামনে ওই দাগের অন্তর্ভূক্ত জমিতে আসাদুজ্জামান রোকনের বড় ভাই বদরুজ্জামান মিলন অ্যাক্সভেটর মেশিন দিয়ে মাটি খনন শুরু করলে রসুলপুর গ্রামের ভূমিহীনরা বাঁধা দেয়। সপ্তাহখানেক পরে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সাথে ভূমিহীনদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কান্তি সরকার বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় আসাদুজ্জামান রোকনকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তার ব্যাপারে আর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান রোকন বলেন, ‘বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কীভাবে তাদের জায়গা ফিরে যাবে সে ব্যাপারে শুধুমাত্র পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমি ভূমিহনীদের বাড়িঘর ছেড়ে দিতে বা উচ্ছেদ করে দিতে বলিনি। অযথাই আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা ও চক্রান্ত করা হচ্ছে।’
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘রসুলপুর গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি ফরওয়ার্ড করে এ্যাসিল্যান্ডের কাছে পাঠানো হবে। এ দ্বন্দ্ব নিরসনে শিঘ্রই এ্যাসিল্যান্ডসহ উভয়পক্ষকে নিয়ে বসা হবে।’