ভোটের মাঠে আ.লীগের সাত প্রার্থী

বিএনপির কেউ প্রচারণায় নেই, জমিয়তের প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম
বিশেষ প্রতিনিধি
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আবার। আগ্রহী প্রার্থীরাও নেমেছেন প্রচারণায়। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় দলের কেউ ভোটের মাঠে নেই। তবে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের প্রার্থী রয়েছেন মাঠে। আওয়ামী লীগের সাত আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার তদবির করছেন বলে দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা জগন্নাথপুরের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয় গেল দুই নভেম্বর। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আকমল হোসেন ২৪ হাজার ১২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন জমিয়তে ওলামায়ের ইসলামের প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম। তিনি পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৭৫০ ভোট। নির্বাচনের এক মাস ২৪ দিনের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন বিজয়ী আকমল হোসেন।
তাঁর মৃত্যুতে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা হয়েছে গেল আট ফেব্রুয়ারি। পদ শূন্য হবার ৯০ দিনের মধ্যে ভোট আয়োজনের নিয়ম রয়েছে।
অন্যদিকে, ভোটের মাঠে প্রার্থীদের পদচারণা বেড়েছে গত কয়েকদিন ধরে। জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম রোববার দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. মাওলানা শাহীনুর পাশা জানিয়েছেন, তাদের প্রার্থী ইউরোপ জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম কামালী।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হয় নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা হরমুজ আলী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, বিজয় কুমার দেব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি হারুন অর রশিদ, যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুবায়ের আহমদ, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন দলীয় মনোনয়নের জন্য তদবির করছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের কমিটি থাকায় দলীয় মনোনয়নের প্রস্তাবনা পাঠানো নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
দলীয় একাধিক নেতা জানান, গত ১৬ নভেম্বর জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হয়েছিলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রয়াত আকমল হোসেন। সহসভাপতি করা হয়েছিল সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মিজানুর রশিদ ভুইয়াকে, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু ও যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছিল আবুল হাসানকে।
আকমল হোসেনের মৃত্যুতে তিন সদস্যের ওই কমিটিতেই মতভিন্নতা দেখা দেয়। দলের একপক্ষ সহসভাপতি মিজানুর রশিদ ভুইয়াকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মানতে নারাজ। এই অবস্থায় সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম কাদের স্বাক্ষরে অগ্রবর্তী হবে, এই নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন স্থানীয় নেতারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু অবশ্য বলেছেন, নিয়ম মোতাবেকই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম অগ্রবর্তী করা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বললেন, কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখ্ত পলিনের সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে করণিয় নির্ধারণ করা হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আহমদ বললেন, উপজেলায় এক লাখ ৮৯ হাজার ৩৯ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ৯৫ হাজার ৩২৩ এবং নারী ৯৩ হাজার ৭১৬ জন। সকল ভোটার যাতে নির্বিগ্নে ভোট দিতে পারেন সেই ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বললেন, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচনের ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু হবে আমাদের।