হোসেন তওফিক চৌধুরী
মহান ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির মহাজাগৃতির এক অবিস্মরনীয় মাইলফলক। ভাষা আন্দোলন থেকেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ও জাতীয়তাবাদ অনুপ্রাণিত হয়। মহান ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে স্বায়ত্বশাসন ও স্বাধীকার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। স্বাধীকার ও স্বায়ত্বশাসন চেতনা বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে এবং বাঙালি জাতি দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। বিশ্বে বাংলাদেশ নামের নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়।
বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাঙালি জাতির আগে আর কোন জাতি নিজ মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠান জন্য আমাদের মত এত ত্যাগ স্বীকার করেনি। ভাষা প্রতিষ্ঠান মহান আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে এক অনন্য ও বিস্ময়কর। মাতৃভাষাকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠান আন্দোলনই জাতিকে নিজস্ব অস্তিত্ব, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন ও উজ্জীবিত করে তুলে। ফলে বাঙালি জাতি সংগ্রাম ও যুদ্ধের মধ্য দিয়ে নিজস্ব দেশ প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বের বুকে মাথা ও শির উঁচু করে দাঁড়ায়।
ভাষা আন্দোলন শুধু প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধের শিক্ষাও দিয়েছে। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার শিক্ষা ভাষা আন্দোলনই উজ্জীবিত করেছে। সে জন্য মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনা চিরস্থায়ী, অনন্য ও বিস্ময়কর। যুগ যুগ ধরে এই চেতনা বাঙালি জাতিকে চেতনা সমৃদ্ধ করে ভবিষ্যৎ সৃষ্টির দিকে ধাবিত করবে। এই চেতনার মৃত্যু নাই। এই চেতনা মৃত্যুঞ্জয়ী। এই চেতনা আমাদের অহংকার।
মহান ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষা রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিল না। ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতির মহাজাগৃতির আন্দোলন। এই আন্দোলন থেকেই বাঙালি জাতি বিশ্বে নিজস্বতা প্রতিষ্ঠা করে। ভাষা প্রতিষ্ঠার পথ ধরেই স্বাধীনতা অর্জন করে। এই জন্য ভাষা আন্দোলন আমাদের ইতিহাসের মহত্তম অধ্যায়।
লেখক: আইনজীবী-কলামিষ্ট।
- ৮৮ ইউনিয়নে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে তথ্যচিত্র
- ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ/অমরত্বের স্পর্শ দিয়ে গেছেন ভাষাশহিদরা