স্টাফ রিপোর্টার
তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে খেলোয়াড় নামানোর অভিযোগে আদালতে মামলা হওয়ায় সুনামগঞ্জে স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ স্থগিত করতে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সোমবার সুনামগঞ্জ সদর আদালতের বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ প্রবাল চক্রবর্তী এই আদেশ দেন।
তিন বছর পর সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে জেলা স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ক্রিকেট লীগ গেল ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। ১১ টি দল তাতে অংশ নেয়।
খেলার প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার পর কিছু খেলোয়াড় ও দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং সুপার লীগ স্থগিত চেয়ে ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ৮ টি দল। সেই অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে খেলা চালানোর নির্দেশ দেন ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাকির হোসেন।
অন্যদিকে, অভিযোগকারীরা ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও সম্পাদকের দেওয়া সিদ্ধান্তে সন্তোষ্ট না হয়ে আদালতে সোমবার মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী হয়েছেন নিউ মিলেনিয়াম দলের টিম ম্যানেজার লাভলু আহমেদ।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার দাস রায় জানালেন, আদালত জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রাজাকে কারণ দর্শাণোর আদেশসহ চলমান ক্রিকেটলীগ অনুষ্ঠিত না করা মর্মে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
এর আগে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি বরাবর করা আটটি ক্রিকেট দলের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ক্রিকেট অনুবিধিমালার ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ক্রিকেটার রাজীব ও মান্নার দাখিলকৃত কাগজ আইন পরিপন্থী এবং মিজবাহ, হিরা ও নাহিদের দাখিলকৃত পাসপোর্ট কপি অস্পষ্ট ও সন্দেহজনক। এছাড়াও রাজীব মিয়া ও সনি দাশের পিতা সিলেট জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। এসব খেলোয়াড় ও প্যারামাউন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা ও অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সুপার লীগ স্থগিত করার আবেদন জানানো হয়। অভিযোগে স্বাক্ষর করেন নিউ মিলেনিয়াম , ওয়েস্টার্ন, বাঁধন, নিউ স্টার, নতুনপাড়া, দিগন্ত, ফ্যান্টম, অগ্নিবীণা ক্রিকেট ক্লাবের কর্মকর্তারা।
ওয়েস্টার্ন ক্রিকেট ক্লাবের কর্মকর্তা জুনেল আহমেদ রাজরান বলেন, প্যারামাউন্ট ক্লাবের কর্মকর্তারা বেআইনি ভাবে সুনামগঞ্জের বাইরে থেকে খেলোয়াড় এনেছেন। আমরা প্রমাণসহ অভিযোগ জানানোর পরও সংশ্লিষ্টরা আমাদের কোনো উত্তর দেন নি। এর আগেও একই অভিযোগের দায়ে একটি দল ও খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ক্রীড়া সংস্থা। কিন্তু প্যারামাউন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
মামলার বাদী ও নিউ মিলেনিয়াম ক্রিকেট ক্লাবের ম্যানেজার লাভলু আহমেদ বললেন, ১ম বিভাগ ক্রিকেট লীগে একটি ক্লাবের ৬ জন খেলোয়াড় অবৈধভাবে খেলছেন। প্রথমে আমরা ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি বরাবর অভিযোগ করি। পরে আমরা নিজেরাই প্রমাণ সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি। কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ন্যয় বিচার পেতে বাধ্য হয়েই আদালতে যেতে হয়েছে।
প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনাম আহমদ বললেন, যে খোলোয়ারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ দীর্ঘদিন এই মাঠে জেলা ক্রিকেটদলে খেলেছে। জেলা যুব ক্রিকেট দলেও ছিল তারা। এছাড়া এই খেলোয়াররা কয়েক বছর হয় সুনামগঞ্জ ক্রিকেট বিভাগে অন্যান্য দলে খেলে দল বদল করে প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবে এসেছে, তাও বেশ কয়েক বছর আগে। অভিযোগের বিষয়টি হাস্যকর।
সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক রেজুয়ানুল হক রাজা বললেন, তিনবছর পর ক্রিকেট লীগ চলছে। অনেকদিন পর মাঠে এসেছেন খেলোয়াররা। জমজমাট আয়োজনে ক্রিকেটলীগ শুরু হয়েছে। কিছু দল ছয় জন খেলোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্ত করা হয়। তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায় নি। পরে আরও একজনের উপর অভিযোগ দায়ের হয়। এটারও সত্যতা পাওয়া যায় নি। আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি, আদেশ এখনো দেখি নি।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন বললেন, আদালতের কোন আদেশ আমরা এখনো পাইনি। পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
- টমেটোর বাম্পার ফলনেও হতাশ কৃষক
- বাঁধের কাজে গাফিলতি করায় পিআইসি সভাপতি আটক