মাদ্রাসা শিক্ষদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ নুরুল কোরআন কওমী মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আশরাফ আলীর বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনাসহ মাদ্রাসা পরিচালনায় বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। গত মঙ্গলবার একই ইউনিয়নের জিংলীগড়া গ্রামের মৃত আব্দুল করিম আকন্দের ছেলে একলেমুর রেজা আকন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগপত্রে পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশও করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের মধ্যনগর সড়কের পূর্ব পাশে ২০০৮ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত চালু থাকা এ মাদ্রাসায় বর্তমানে ২২ জন শিক্ষকের বিপরীতে বিভিন্ন এলাকার ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসার শুরু থেকেই মুহতামিম হিসেবে আফরাফ আলী নিজের খেয়াল খুশিমতো দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি শিক্ষক নিয়োগ, যে কোনো সময়ে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা, শিক্ষকদের বেতন আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। মাদ্রাসার আয় ব্যয়ের ব্যাপারে তিনি কারও কাছে কোনো তথ্য প্রকাশ করেন না। সম্প্রতি মাদ্রাসার উপদেষ্টা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনোনীত কয়েকজন ব্যক্তি মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব করেছেন। এতে অনেক শিক্ষকের বেতন বকেয়াসহ আট লাখ টাকার অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এছাড়াও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিভিন্ন গরুর ঘাস কাটানো, বাসার বাজার করানো, বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাঁশ বহন করে আনানো, কায়িক পরিশ্রম করানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের একটি ঘরে মুহতামিম পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। এছাড়াও তাঁর একটি নিজস্ব ছোট কামরা রয়েছে। যেখানে কামরায় কারও যাওয়ার অনুমতি নেই। সেখানে শিক্ষার্থীদের দিয়ে শারীরিক সেবা গ্রহণ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক তার খাসকামরায় অনৈতিক কার্যকলাপ চালায়। যার প্রমাণ রয়েছে। মাদ্রাসায় তিনি গরুও পালন করেন।’
অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফ আলী তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘বিগত সময়েও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে। অভিযোগকারী আরেকটি মাদ্রাসার সাথে জড়িত। তার মাদ্রাসা এখনও প্রাথমিকের স্তর পার হতে পারেনি। আর আমার মাদ্রাসা দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) পর্যন্ত চালু হয়েছে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে এখান থেকে বিদায় করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’
মাদ্রাসার সভাপতি আল্লাদ মিয়া বলেন, ‘মুহতামিমের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ এসব অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়। হিসাবপত্রে মাদ্রাসার চার লাখ টাকা ঋণ পাওয়া গেছে। অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেলে আমরাইতো এ নিয়ে কথা বলতাম। মাদ্রাসার নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’