পি সি দাশ, শাল্লা
বন্যার করাল গ্রাসে যখন আশপাশে করুন অবস্থা দেখা দিয়েছে ঠিক তখনি চম্পা তালুকদার নামে এক সহকারী শিক্ষিকা অভুক্ত বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে নিজ উদ্যোগ। তিনি হলেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বাহাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা চম্পা তালুকদার। গত দু’দিন ধরে তিনি শাল্লা সদরের নিজ বাসা নিজ হাতে ভুনাখিচুড়ি রান্না করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যান। এ দৃশ্য দেখা গেল গত বুধবার দুপুর ১ টার দিকে।
হঠাৎ কৌতুহলে একজনকে জিজ্ঞাসা করি এত খাবার নিয়ে কারা কোথায় যাচ্ছেন। উত্তরে ফেড়ি নৌকার (মাঝি) একজন বলেন, দাদা- ওই যে নৌকায় দাঁড়িয়ে আছে ম্যাডাম তিনি নিজে দুই দিন ধরে খাবার দিতেছে বিভিন্ন জায়গায়। আজও বহু খাবার নিয়ে ইউএনও স্যার সহ বাহাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে যাইতাছে। সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটি বলতে শুনা যায় এরাই তো মানুষ। নিজের টাকার সাহায্য করতাছে।
এমনটি শুনে আগ্রহ নিয়ে শিক্ষিকা চম্পা তালুকদার কে জিজ্ঞাসা করি আপনি কি নিজেই খাবার দিচ্ছেন। তিনি উত্তরে জানান, আমার বলতে কিছু নেই, আজ যা আছে কাল নাও থাকতে পারে। মানুষের এমন কষ্টের সময় তাদের পাশে একটু থাকার চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, আমি যা করছি সব টুকুই আমার বিবেক করতে বলেছে তাই করছি। কে কি বলে বা বলবে সে বিষয়ে আমি কর্ণপাত করিনি।
জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস প্রধান সম্ভু দেবনাথে স্ত্রী চম্পা তালুকদার। তাদের ২ টি মেয়ে রয়েছে। সম্ভু দেবনাথ বলেন, যখন এলাকায় ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিয়েছে। তখন আমি ও আমার স্ত্রী মিলে আলোচনা করি কি করে বানভাসি মানুষের একটু সেবা করা যায়। তখন চম্পাই এই পরামর্শ দেন যে, নিজে রান্না করে যতদিন পারি অনাহারী মানুষের মুখে খাবার তুলে দিবো। আমিও আমার স্ত্রী সঙ্গে সহমত পোষণ করি। তার পর দিন থেকে সেই সব কিছু করছে। তিনি বলেন এতে আমি খুব তৃপ্তি পাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, শিক্ষিকা চম্পা তালুকদারের উদ্যোগটি খুবই প্রশংসা করার মতো। আমি উনার মানসিকতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি মনে করি শিক্ষিকা চম্পা তালুকদার একজন মানবিক ব্যক্তিত্বের দৃষ্টান্ত।
- ঈদের পরে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা
- তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ