শহরের পাঁচ খালের দখলদারের তালিকা চেয়েছেন আদালত

স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জ শহরের ৫ টি খালের দখলদারদের পূর্ণ তালিকা চেয়েছেন আদালত। রোববার হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন।
সুনামগঞ্জ শহর এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী এবং নলুয়খালী নামক ৫ি ট খালের প্রকৃত প্রবাহ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে এই ৫টি খালে বিদ্যমান দখলদারদের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত ও তাদেরকে খালের জায়গা হতে উচ্ছেদের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত।
উল্লেখিত নির্দেশনাবলীর বাস্তবায়ন সাপেক্ষে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিবাদীদেরকে আদালতে প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।
অন্তবর্তীকালীন এ আদেশের পাশাপাশি অননুমোদিত দখল হতে উল্লেখিত ৫টি খাল রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতা কে কেন আইন বহির্ভুত ও জনস্বার্থ পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে বিবাদীগণের উপর রুল জারি করেন আদালত। সেইসাথে খালসমূহে বিদ্যমান সকল দখলদার ও ক্ষতিকর স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালসমূহ রক্ষা, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী এবং নলুয়খালী নামক ৫টি খাল দখলমুক্ত করে তা সংরক্ষণে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি’র (বেলা) দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক (নং ১০৮১/২০২৩) মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং জনাব বিচারপতি আহমেদ সোহেল এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ শহরের পানি নিষ্কাশনে অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে উল্লেখিত খালসমুহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল। সম্প্রতি খালসমূহ দখল করে গড়ে উঠেছে স্থাপনা, রাস্তা ও সরকারি অফিস। ফলশ্রুতিতে খালগুলো সরু নালাতে পরিণত হয়েছে। অব্যাহত দখলের কারণে কোথাও কোথাও খালগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হবার শঙ্কায় রয়েছে। শহরের পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে শহরের জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। এমন অবস্থায় সুনামগঞ্জ শহরবাসীর অনুরোধে তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী এবং নলুয়খালী খালসমূহ দখলমুক্ত করে যথাযথ সংরক্ষণে বেলা উল্লেখিত মামলা দায়ের করে।
মামলার বিবাদীগণ হলেন- সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়; সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়; সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; চেয়ারম্যান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন; মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড; জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ; পুলিশ সুপার, সুনামগঞ্জ;পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট; মেয়র, সুনামগঞ্জ পৌরসভা; উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা, সুনামগঞ্জ সদর, সুনামগঞ্জ; নির্বাহী প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জ পওর বিভাগ-১, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জ; নির্বাহী প্রকৌশলী, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জ এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি), সুনামগঞ্জ সদর, সুনামগঞ্জ ।
বেলার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সংগঠনের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং তাঁকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।