শান্তিগঞ্জের খাই হাওরের বাঁধ কেটে ব্রীজ নির্মাণ!

শান্তিগঞ্জ অফিস
শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে লাউয়া নদীতে (বেদাখালী) ব্রীজ নির্মাণের কাজ চলছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের বোর ফসলি জমি ও ফসলরক্ষা বাঁধ। কৃষকদের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই বাঁধ কেটে ব্রীজ নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। কৃষকরা বলেছেন, দুই দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়হীনতায় বিপদে পড়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে রজনীগঞ্জ বাজার সড়কের বসিয়াখাউরী পর্যন্ত আরসিসি কাজ চলমান রয়েছে। একইসঙ্গে ওই সড়কের বেদাখালী এলাকার লাউয়া নদীর উপর প্রায় ১০ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫৮৩ টাকায় ব্রীজ নির্মাণ কাজ চলছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) তত্বাবধানে বিশ্বব্যাংক ও জিওবি’র অর্থায়নে চলতি বছরের প্রথম দিকে ব্রীজ নির্মাণের কাজের পাইলিং কাজ শুরু হয়। এসময় ওই এলাকার একটি ফসলরক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার কেটেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে খাই হাওরের প্রায় ২৯ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিং কমিটির নির্দেশে ৫৩ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ৩৩০ মিটার ফলসরক্ষা বাঁধের কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত পিআইসির লোকজন বাঁধের ৫০ মিটার অংশে কাজ করে নি। তাদের দাবি ব্রীজের পাইলিংয়ের কাজ করায় বাঁধের কাজ করা যাচ্ছে না। তাতে বিপদ হতে পারে পারে হাজার হাজার কৃষকের। এই অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ডুবতে পারে হাওর।
পিআইসির সভাপতি মো. আফিকুল ইসলাম বললেন, বাঁধের বড় একটি অংশ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন কেটে ফেলেছে। বাঁধ নির্মাণের সময় শেষ হয়ে আসছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ না করতে পারলে বাঁধ টেকসই হবে না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, খাই হাওরে প্রায় ২৯ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের লোকজন বাঁধ কাটার বিষয়টি অবগত করেন নি। বাঁধের কাজ শেষের দিকে, কিন্তু এই অংশে কাজ করা যাচ্ছে না। এই অংশে কাজ না করলে হাওর ঝুঁকিতে থাকবে।
শান্তিগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী আল নুর তারেক বলেন, ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনেই বাঁধটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন কেটেছে। বাঁধ নির্মাণের নির্ধারিত সময় ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধটি মেরামত করা হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উজ জামান বললেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ব্রীজ নির্মাণ কাজ একই স্থানে হওয়ায় বাঁধ কাটা হয়েছে। ফসল রক্ষা বাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সমাধান করা যাচ্ছে না। বাঁধের কাজ শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়া করে শেষ করতে চাইলে বাঁধটি দুর্বল হতে পারে ।