স্টাফ রিপোর্টার
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা ঘরে বসে থাকবো না, দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। রাজপথে আমরা এমন আন্দোলন করবে,া যাতে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এখন আমাদের অপেক্ষা শুধু কখন হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দেবে।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় পুরাতন বাস স্টেশনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি’র প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, জনসমাগম দেখে আমার বিশ^াস অল্প কিছুদিনের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবেই হবে। বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি করে না, বিএনপি সহমর্মিতার রাজনীতি করে। অনেক অত্যাচার আমরা সহ্য করেছি, আমাদের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। আমাদের নেতা সিলেটের ইলিয়াছ আলী গুম হয়েছেন, তিনি বেঁচে আছেন কী-না আমরা জানি না। এরকম আমাদের হাজার হাজার কর্মী গুম হয়ে গেছে। আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আগামীতে সরকারের পরিবর্তন হলে আমরা দেশের জনগণের শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের ব্যবস্থা করবো।
জনসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, খেলা শুরু হয়ে গেছে। উনারা চুরি ডাকাতি করে আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন। পতন শুরু হয়েছে। এই পতনই জনবিচ্ছিন্ন সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামতে বাধ্য করবে। এই মুহূর্তে নির্যাতিত, নিপিড়িত জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদেরকে মাঠে থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে হবে। এই সরকার নিশিরাতের সরকার, ভোট চোর সরকার। এই ভোটচোর সরকারের কাছ থেকে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কমাতে হবে, মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করা বন্ধ করতে হবে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুতি নিতে হবে- আগামী দিনে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে মানুষকে তাদের পছন্দের সরকার গঠনে আমাদের সাহায্য করতে হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আনিসুল হক, জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাদীর আহমদ, জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মুনসুর শওকত, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড. মাসুক আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তৈয়বুর রহমান বাবুল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড. শেরেনুর আলী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোনাজ্জির সুজন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সমাবেশ একটি একটি মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছিল সুনামগঞ্জ শহর। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে বিএনপি’র জেলা পর্যায়ের সমাবেশ উপলক্ষে শহরের পুরাতন বাসস্টেশনে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সকাল সাড়ে দশটা থেকেই এখানে সমাবেশে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। একই সময়ে বেলা ১১ টায় রমিজ বিপণির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে।
শহরে প্রবশের একমুখী পথ থাকায় দুইপক্ষের মিছিল নিজ নিজ সমাবেশস্থলে ঢুকার সময় কিছুটা উত্তেজনাও দেখা দেয়। তবে স্থানে স্থানে পুলিশ মোতায়েন এবং দুইপক্ষের নেতা-কর্মীদের হস্তক্ষেপে বড় কোন সংঘর্ষের ঘটনা ছাড়াই বিএনপির ১০ দফা দাবির সমাবেশ এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষ হয়।
- ‘ষড়যন্ত্র করে দেশকে পিছিয়ে দিবেন না’
- তাহিরপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ