জগন্নাথপুর অফিস
লন্ডন যাওয়ার স্বপ্ন সড়কের ঝরলো জগন্নাথপুরের হাদিউল কামালীর (৩৮)। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার জেলা পাসপোর্ট কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য জগন্নাথপুর থেকে রওয়ানা হয় হাদিউল। সুনামগঞ্জ শহরের প্রবেশমুখ হালুয়ারগাঁও এলাকায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মালমাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান তিনি। ময়নাতদন্তের পর লাশ মঙ্গলবার রাতে তাঁর গ্রামের বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই গ্রামে এলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরণ ঘটে। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। বুধবার সকাল থেকে মরদেহে দেখে পরিবারের লোকজন কে সান্ত¡না দিতে লোকজন ভিড় করেন। এসময় তাদের তাদের কান্নায় স্বজনরাও কাঁদেন।
গ্রামবাসী ও স্বজনরা জানান, গ্রামের হাফিজ সিরাজুল ইসলামের তিন ছেলে ৫ মেয়ের মধ্যে হাদিউল কামালী ছিলেন দ্বিতীয়। তিনি নরসিংদী একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। অস্বচ্ছল সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে তিনি যুক্তরাজ্য প্রবাসী চাচার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । সে লক্ষ্যে পাসপোর্ট করতে সুনামগঞ্জ শহরে পাসপোর্ট কার্যালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। বেলা ১১টায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে মারা যান হাদিউল কামালী ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা অটোরিকশা যাত্রী নাসির আলম (৪০)। এ ঘটনায় আহত হন জগন্নাথপুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক ছইল মিয়া (৪৫) ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া এলাকার মিজান আহমদ। তারা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাদিউল কামালীর ভাই ইজাজুল ইসলাম কামালী বলেন, আমাদের আদরের ভাইকে হারিয়ে আমরা হতবাক। আমার বৃদ্ধ বাবা-মা পাগলের মতো প্রলাপ করছেন, কীভাবে সান্তনা পাবো বুঝে উঠতে পারছি না। তিনি বলেন, ভাইটি পরিবারের অভাব অনটন দূর করতে বিদেশ যেতে চিয়েছিলো। চাচা তার আগ্রহ দেখে তাকে লন্ডনে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন। তাই সে অনেক আশা নিয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়েছিল।
ধাওরাই গ্রামের বাসিন্দা আমির খান সাব্বির বলেন, ছেলেটি এলাকাবাসীর কাছে ভালো হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পুরো পরিবার ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত। তার আচার ব্যবহার অতুলনীয়। সে কোরআান এ হাফিজ ছিল। এমন মৃত্যুতে এলাকাবাসী শোকে কাতর।
আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারকে সান্তনা দিতে চেষ্টা করেছি। এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তদন্ত সুশংকর পাল বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার রাতে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
- সড়কে নিরাপদে চলার সুযোগ চাই
- শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে মারামারি/ ৪ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ